দীপাবলির পরে প্রচারে গিয়ে লালুপ্রসাদ-রাবড়ী জমানার দুর্নীতি ও জঙ্গলরাজ প্রশ্নে সরব হলেন নরেন্দ্র মোদী। আর গুজরাত থেকে বিহার নিয়ন্ত্রণ করার অভিপ্রায় নিয়ে দুই গুজরাতি এগোচ্ছেন বলে পাল্টা দিলেন তেজস্বী যাদব। তিনি বলেন, ‘‘কোনও অ-বিহারির নিয়ন্ত্রণ বিহার মানবে না।’’
আজ সমস্তিপুরের দুধপুরায় জনসভা করেন নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের মহাজোটকে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস-আরজেডির জোট ক্ষমতায় এলে বিহারে জঙ্গলরাজ ফিরে আসবে। এখনই থেকেই বিরোধীরা নিজেদের মধ্যে বোমা-গুলি নিয়ে সংঘর্ষ শুরু করে দিয়েছে।’’ এ-ও বলেন, ‘‘পরিবারভিত্তিক দুই দলের নেতারা দুর্নীতির অভিযোগে জামিনে মুক্ত রয়েছেন।’’ তাই দুর্নীতিগ্রস্ত ওই জোটকে হারিয়ে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে বিহারে রেকর্ড সংখ্যক আসনে জেতার ডাক দেন মোদী। বক্তৃতায় ১৭ বার জঙ্গলরাজ শব্দটির উল্লেখ করে লালুপ্রসাদের শাসনের স্মৃতি উস্কে দিতে চেয়েছেন মোদী।
সিওয়ানে আরজেডি নেতা তথা কুখ্যাত বাহুবলী সাহাবুদ্দিনের প্রশ্নে সরব হন অমিত শাহ। সাহাবুদ্দিনের ছেলে ওসামাকে টিকিট দিয়েছে আরজেডি। শাহের বক্তব্য, ‘‘সাহাবুদ্দিনের সময়ে সিওয়ানের পরিস্থিতি কেমন ছিল, তা সবাই জানেন। সেই অরাজকতা ও জঙ্গলরাজ ফেরাতেই তার ছেলেকে টিকিট দেওয়া হয়েছে।’’ আজ জনসভা শুরুর আগে সমস্তিপুরে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরী ঠাকুরের গ্রামে যান প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, কর্পূরীর পুত্র তথা বিহারের জেডিইউ নেতা রামনাথ ঠাকুর। রাজনীতিকদের মতে, কর্পূরী ঠাকুর মূলত অতি পিছিয়ে থাকা শ্রেণির নেতা ছিলেন। আজ তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মূলত ওই ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী। তাঁর দাবি, ‘‘কংগ্রেস বা আরজেডি নেতারা ক্ষমতায় থাকাকালীন কর্পূরী ঠাকুরের অবদান মুছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এনডিএ সরকার তাঁকে ভারতরত্ন দিয়েছে।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ পাল্টা বলেন, ওবিসি সমাজকে ২৬% সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কর্পূরী ঠাকুরের সরকার ফেলে দেয় গেরুয়া শিবির। এখন কী ভাবে মোদী কর্পূরীর সম্মানে এত কথা বলছেন?
সমস্তিপুর ও বেগুসরাইয়ের সভা থেকে মোদী দাবি করেন, নীতীশের শাসনে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ায় প্রতিটি জেলা বিনিয়োগ টানার জন্য তৈরি হয়ে রয়েছে। আরজেডি-কংগ্রেসের শাসনে কী ভাবে বিনিয়োগকারীরা বিহারকে এড়িয়ে যেত তা নিয়েও সরব হন মোদী। তিনি বলেন, এনডিএ ক্ষমতায় এলে বিহারে শিল্পায়নের জোয়ার আসবে। যা নিয়ে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘তা হলে দু’দশক ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও কেন বিনিয়োগ আসেনি বিহারে? যত শিল্প আসবে গুজরাতে। আর ভোট চাওয়া হবে বিহারে। এ সব আর চলবে না।’’ মোদী-শাহ জুটি নীতীশকে কার্যত অকেজো করে গুজরাত থেকে বিহার নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে সরব হয়েছেন তেজস্বী। তিনি বলেন, ‘‘দু’জন গুজরাতি বিহার চালাবেন, এ আর মেনে নেবেন না বিহারবাসী।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)