বক্তা: গুজরাতে ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী। অমদাবাদ জেলার ধন্ধুকা গ্রামে। ফাইল ছবি।
খাপ থেকে মেরুকরণের তরবারি পুরোদস্তুর বার করে সেটিকে গুজরাত ভোটের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ২৫ বছর পূর্তির দিনে রামমন্দির দিয়েই মোড় ঘোরাতে চাইলেন ভোটযুদ্ধের।
মোদীর আগেই আজ সকালে বিজেপির এক মুখপাত্র রাহুল গাঁধীকে ‘বাবর-ভক্ত’, ‘খিলজির বংশধর’ বলে ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলেন। ফাঁদে পা না-দিয়ে দিনভর এই নিয়ে চুপই থাকলেন রাহুল। কংগ্রেস শুধু পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ল, রামমন্দির নিয়ে শীর্ষ আদালতের রায় তো সকলে মানবে, কিন্তু গাঁধীর ‘রামরাজ্য’ কবে আনবেন মোদী? আর উন্নয়নের আসল প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে কেন কুৎসিত খেলায় নামছেন ‘তুঘলকের বংশধর’?
শুনানি পিছনোর পরে অমিত শাহ কাল রাতেই মোদীর জন্য মেরুকরণের জমি সাজিয়ে রেখেছিলেন। সেই অঙ্ক কষেই গুজরাতের মাটিতে আজ মোদী, যোগী আদিত্যনাথ আর অমিত শাহের সাঁড়াশি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। গেরুয়া শাল পরে প্রথম সভাতেই রামমন্দিরের তরোয়ালটি বার করেন মোদী। বলেন, ‘‘রামমন্দির পিছিয়ে পাপ করছে কংগ্রেস। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড তো ভোটে লড়ে না। তা হলে তাদের কৌঁসুলি কংগ্রেসের কপিল সিব্বল কেন সুপ্রিম কোর্টে লোকসভা ভোট পর্যন্ত রামমন্দির মামলা পিছনোর কথা বললেন?’’
গুজরাত ভোটের তিন দিন আগে মেরুকরণের তাসটি পুরোদমে খেলতে বিজেপি শিবির কাল থেকেই প্রচার শুরু করেছে, ‘‘হাওয়ার সঙ্গে নিজের রং বদলান রাহুল গাঁধী। উত্তরপ্রদেশে ‘মৌলানা’ আবার গুজরাতে ‘পৈতেধারী হিন্দু’!’’ মোদীর উগ্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আজ আসরে নামলেন যোগী-অমিতও। যোগী তুললেন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। বাড়তি অক্সিজেন জোগালেন সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের হাজি মেহবুব। তিনি বলে বসলেন, ‘‘আমরা দ্রুত শুনানির পক্ষে। সিব্বল ভুল বলেছেন।’’ দ্বিতীয় সভা থেকে মোদী হাজি মেহবুবের কথাকেই অস্ত্র করে বলতে শুরু করলেন, ‘‘আরও স্পষ্ট হল যে, শুধু কংগ্রেসই মন্দির আটকাতে চাইছে।’’
বিতর্ক বাধায় বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির জাফর ইয়াব জিলানি সিব্বলের পক্ষে এসে বলেন, ‘‘গেরুয়া শিবির মন্দির নিয়ে ভোটের ফায়দা নিতে চাইছে।’’ তখন সুর বদলান হাজিও। রাতে সামনে এলেন কপিল সিব্বলও। বললেন, ‘‘আমি সুন্নি বোর্ডের কৌঁসুলি নই। ভগবান চাইলে মন্দির হবে, নরেন্দ্র মোদীর কথায় নয়। দেশ নয়, শুধু মন্দিরের চিন্তা করেন প্রধানমন্ত্রী। আমাকে নিশানা করে দেশের আসল সমস্যার সমাধান করতে পারবেন কি তিনি?’’
কংগ্রেস নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, ভোটের শেষ লগ্নে হিন্দুত্বের হাওয়া তুলে আসলে অনুন্নয়নের অস্বস্তিকর প্রশ্নগুলো এড়ানোর কৌশল নিয়েছেন মোদী-শাহ। দলীয় কর্মীদের এর ফাঁদে না-পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাহুল। নিজে আজ এ প্রসঙ্গে কিছুই বলেননি। শুধু দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাকে দিয়ে বলানো হয়েছে, ‘‘কুর্সি আকড়ে বিজেপিই তো রামকে বনবাসে পাঠাচ্ছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy