E-Paper

মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রক্রিয়ায় গাফিলতি নেই: কমিশন

মহারাষ্ট্রে পরাজয়ের পরে কমিশনের কাছে মূলত দু’টি অভিযোগ জানিয়েছিল কংগ্রেস। প্রথমত, নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়া বা সংযোজিত হওয়ার ফলে প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় দশ হাজার ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৫২
জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

জাতীয় নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে কংগ্রেসের যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তারা জানিয়েছে, ভোট প্রক্রিয়াতে কোনও অস্বচ্ছতা ছিল না। সুষ্ঠু ভাবেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে মহারাষ্ট্রে। ভোট দেওয়ার ফুটেজ, ভোটের সময়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন নথি যাতে আমজনতার নাগালের বাইরে থাকে তা নিশ্চিত করতে গত শনিবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল কমিশন। আজ সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থহল কংগ্রেস।

মহারাষ্ট্রে পরাজয়ের পরে কমিশনের কাছে মূলত দু’টি অভিযোগ জানিয়েছিল কংগ্রেস। প্রথমত, নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়া বা সংযোজিত হওয়ার ফলে প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় দশ হাজার ভোটার বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা নির্ণায়ক ভূমিকা নিয়েছে একাধিক বিধানসভায়। দ্বিতীয়ত, ভোটের দিন বিকাল ৫টায় ভোট পড়ার হারের সঙ্গে রাত পৌনে ১২টায় কমিশন প্রকাশিত ভোটের হারের মধ্যে ব্যাখ্যাতীত পার্থক্য লক্ষ্য করা গিয়েছে। কেন ওই পার্থক্য তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল কংগ্রেস।

জবাবে কমিশন আজ জানিয়েছে, পাঁচ বছর পরে বিধানসভা ভোটে যদি কোনও কেন্দ্রে দশ হাজার ভোটার বেড়ে থাকে, তা হলে তার মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। কমিশনের আরও বক্তব্য, ভোটার তালিকা তৈরিতে যে নিয়ম রয়েছে, তা মেনে চলা হয়েছে। ওই তালিকা তৈরির সময়ে আগাগোড়া অন্য দলের কর্মীদের মতোই কংগ্রেস কর্মীরা যুক্ত ছিলেন। দ্বিতীয় অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিশনের যুক্তি, চূড়ান্ত তালিকার ভোটের হারের সঙ্গে বিকেল ৫টার সময়ে প্রকাশিত হারের পার্থক্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। তা ছাড়া, প্রার্থীদের এজেন্টদের কাছে ফর্ম নম্বর-১৭-সি থাকে। যাতে কত ভোটার রয়েছে, কত ভোট পড়ল তার সম্পূর্ণ খতিয়ান থাকে। সেগুলি মিলিয়ে দেখলেই সব পরিসংখ্যান মিলে যাওয়ার কথা। কমিশনের দাবি, নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য কোনও ভাবেই জাল করা সম্ভব নয়। কমিশনের পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রের ভোটের ফল নিয়ে সন্দেহ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিরোধী জোট। এ নিয়ে শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন দিল্লিতে এনসিপি(এসপি) নেতা শরদ পওয়ারের বাড়িতে বৈঠকও হয়। কিন্তু কাজের কাজ এগোয়নি।

সম্প্রতি হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনের ভোট দেওয়ার ভিডিয়ো, বুথের ভিতরকার ভিডিয়ো ফুটেজ এবং ভোট সংক্রান্ত নথি চেয়ে হরিয়ানা হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন এক ব্যক্তি। যে আবেদন মেনে নেয় আদালত। তার পরেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে গত শনিবার কমিশন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, ভোট দেওয়ার ভিডিয়ো-সহ কোনও সংশোধিত নথি দেখার অধিকার থাকবে না কারও। কমিশনের যুক্তি, ভোট দেওয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে চলে এলে ভোট দেওয়ার প্রশ্নে গোপনীয়তা যেমন ভঙ্গ হবে তেমনি কোনও ভোটার কাকে ভোট দিয়েছেন তা প্রকাশ্যে এলে সেই ব্যক্তির প্রাণ সংশয়ের মতো গুরুতর পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোনও কেন্দ্রের প্রার্থী চাইলে ওই ভিডিয়ো দেখতে পারেন।

ওই পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে আরও তলানিতে ঠেলে দিয়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের। দলের নেতা জয়রাম রমেশের মতে, নির্বাচন কমিশন কোনও ভাবেই আমজনতার তথ্য গোপন করতে পারে না। বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে ওই নির্দেশিকা বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি নিজেদের কুকর্ম লুকাতেই শাসক দলের নির্দেশে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। প্রতিটি সাংবিধানিক সংস্থাকে নিজের মতো করে ব্যবহার করছেন বিজেপি নেতারা। এ নিয়ে আজ কংগ্রেস নেতা পবন খেড়া বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কার্যত নিজেরই আর একটি দফতরে পরিণত করেছেন। ’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Election Commission of India Congress Maharashtra Assembly Election 2024

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy