Advertisement
১১ মে ২০২৪
Wife

National Family Health Survey: বৌ পেটানো কি ঠিক? সরকারি সমীক্ষায় কী বললেন দেশের নানা প্রান্তের মহিলারা

এই সমীক্ষার আওতায় আসা মহিলারা মনে করছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকেদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করাটাই স্বামীর হাতে স্ত্রীর নিগ্রহের প্রধান কারণ।

প্রতীকি ছবি

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫৭
Share: Save:

বৌ পেটানো কি ঠিক? সরকারি সমীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তরে তেলঙ্গানার ৮৩.৮ শতাংশ মহিলা বলেছেন, ঠিক। এ ক্ষেত্রে মেয়েদের মধ্যে সমীক্ষায় ‘হ্যাঁ’-এর বিচারে তেলঙ্গানা যেমন শীর্ষে, তেমনই পুরুষদের মধ্যে সবার আগে কর্নাটক। সেই দক্ষিণী রাজ্যের ৮১.৯ শতাংশ পুরুষ মনে করেন, স্বামী যদি স্ত্রীকে মারেন, তাতে কোনও দোষ নেই! পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৩টি রাজ্যে এই সমীক্ষার আওতায় আসা মহিলারাই মনে করছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকেদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করাটাই স্বামীর হাতে স্ত্রীর নিগ্রহের প্রধান কারণ।

জাতীয় পরিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার সাম্প্রতিক প্রকাশিত ফলাফলের কিছু ইতিবাচক দিক নিয়ে চর্চা হচ্ছে ইদানীং। যেমন, শহরাঞ্চলের ৮০.৯ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলের ৭৭.৪ শতাংশ মহিলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছেন। দেশে মহিলা-পিছু শিশুর জন্মহার নেমে এসেছে দুইয়ে। জন্মহারে এগিয়ে শিশুকন্যারা। তা সত্ত্বেও স্বামীর হাতে স্ত্রীর শারীরিক নিগ্রহকে যে ভাবে সমর্থন করেছেন মহিলাদেরই একাংশ, তা উদ্বেগজনক।

২০১৯-২১ সালের মধ্যে এ বারের সমীক্ষাটি হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ, অসম, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গোয়া, গুজরাত, হিমাচলপ্রদেশ, কর্নাটক, কেরল, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজ়োরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, তেলঙ্গানা, ত্রিপুরা এবং কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরে। কেন্দ্রীয় সমীক্ষকেরা প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘‘স্বামী যদি স্ত্রীকে আঘাত করেন বা মারধর করেন, আপনার মতে কি তা যুক্তিসঙ্গত?’’ সেই প্রশ্নেরই উত্তর বাছাই করে দেখা যাচ্ছে, ‘হ্যাঁ’-এর শতকরা হিসেবে পুরুষদের মধ্যে কর্নাটক এবং মহিলাদের মধ্যে তেলঙ্গানা শীর্ষে। দুই তালিকাতেই সবার শেষে হিমাচলপ্রদেশ। সে রাজ্যের মাত্র ১৪.২ শতাংশ পুরুষ এবং ১৪.৮ শতাংশ মহিলা মনে করেন, কাজটা ঠিক। মহিলাদের ‘হ্যাঁ’-এর তালিকায় বেশ উপরের দিকেই রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ (৮৩.৬ শতাংশ), কর্নাটক (৭৬.৯ শতাংশ), মণিপুর (৬৫.৯ শতাংশ) এবং কেরল (৫২.৪ শতাংশ)। পুরুষদের মধ্যে সমীক্ষায় এ ক্ষেত্রে শেষের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা (২১.৩ শতাংশ)। যাঁরা বলছেন বৌ পেটানো ঠিক, কোন কোন কারণে তা মনে করছেন? এ ক্ষেত্রে সমীক্ষকেরা সম্ভাব্য সাতটি কারণের কথা জানতে পেরেছেন। ১) স্বামীকে না বলে বাইরে যাওয়া, ২) সংসার বা সন্তানদের অবহেলা করা, ৩) স্বামীর সঙ্গে তর্ক করা, ৪) স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে না চাওয়া, ৫) ভাল রান্না না করা, ৬) স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে স্বামীর সন্দেহ করা এবং ৭) শ্বশুরবাড়ির লোকেদের ‘অশ্রদ্ধা’ করা। সমীক্ষা বলছে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৩টি রাজ্যের মহিলাদের অভিমত, স্ত্রীর তরফে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের অশ্রদ্ধাই গার্হস্থ হিংসার প্রধান কারণ। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সংসার ও সন্তানদের অবহেলা। এই সম্ভাব্য কারণের তালিকায় সবার নীচে রয়েছে পরকিয়ার সন্দেহ। কিন্তু মিজ়োরামের মহিলাদের মতে আবার সেটাই প্রধান কারণ।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার আগের রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, সারা দেশের ৫২ শতাংশ মহিলা এবং ৪২ শতাংশ পুরুষ গার্হস্থ হিংসাকে যুক্তিযুক্ত বলে মেনে নিচ্ছেন। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় বিভিন্ন রাজ্যে ওই শতকরা হার আশির ঘরে পৌঁছনো নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। মহিলাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ডিরেক্টর সারদা এ এল বলছেন, ‘‘এ হল এক ধরনের পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব, যা মহিলাদের একাংশের মনের মধ্যে গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে। এঁরা মনে করছেন, পরিবার ও স্বামীর সেবা করে যাওয়াটাই তাঁদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Wife Husband Husband-Wife Domestic Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE