E-Paper

মহাসাগরতলে সন্ধান, কোমর বাঁধছে ভারত

মহাশূন্যে মানব-অভিযান করার জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির কয়েক ধাপ পেরিয়ে গিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। এ দিকে মহাসাগরের অতলেও পাড়ি দিতে চলেছেন সমুদ্রবিজ্ঞানীরা।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২১

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মহাসমুদ্রের তলদেশ। সূর্যের আলোও সেখানে পৌঁছয় না। সেই আঁধারে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে, তা জানতে চান বিজ্ঞানীরা। তাই পুরাণের বিষ্ণুর অবতারের নামাঙ্কিত জলযানের পেটে ঢুকে সেই অতলদেশে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের অধীনস্থ
‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশান টেকনোলজি’।

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ওই জলযান প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে। অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের গোড়াতেই তাকে জলে নামিয়ে পরীক্ষা করা হবে। তার পরেও অবশ্য পরীক্ষার আরও কয়েকটি ধাপ বাকি থাকবে। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের শেষেই ভারত মহাসাগরের তলদেশে পাড়ি দিতে পারে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দল।

মহাশূন্যে মানব-অভিযান করার জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির কয়েক ধাপ পেরিয়ে গিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। এ দিকে মহাসাগরের অতলেও পাড়ি দিতে চলেছেন সমুদ্রবিজ্ঞানীরা। যার নাম দেওয়া হয়েছে সমুদ্রযান। বিজ্ঞানমহলের বক্তব্য, এই দুই অভিযান সফল হলে বিজ্ঞান দুনিয়ায় ভারতের স্থান আরও পোক্ত হবে। এ পর্যন্ত চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া মহাসাগরের তলদেশে অভিযান করেছে। ভারতের অভিযানে যে তথ্য উঠে আসবে তাকে কাজে লাগিয়ে আগামী দিনে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার গবেষণায় নতুন দিশা মিলতে পারে।

মধ্য ভারত মহাসাগরে (সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান ওশান বেসিন) ওই গবেষণায় নামবে ভারত। পৌঁছে যাবে ৬ হাজার মিটার গভীরে। এই অভিযানের জন্য যে জলযান (সাবমার্সিবল) তৈরি করা হয়েছে তার নাম দেওয়া হয়েছে মৎস্য-৬০০০। বিষ্ণুর মৎস্যাবতারের নামানুসারেই এই নাম। মহাসাগরের ৬ হাজার মিটার গভীরে যে জলের চাপ তা সহ্য করতে পারে, এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান সচিব এম রবিচন্দ্রন
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, জলযানের সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু বৈদ্যুতিক উপকরণের কাজ চলছে। তার পরেই জলে নামিয়ে পরীক্ষা করা হবে তাকে।

সূত্রের খবর, চেন্নাই হারবারের কাছে প্রথমে সমুদ্রের ১৫ মিটার গভীরে নামিয়ে পরীক্ষা হবে। সেই পরীক্ষা সফল হলে ধাপে ধাপে আরও গভীরতর এলাকায় নিয়ে পরীক্ষা হবে।

ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের খবর, ৬ হাজার মিটার গভীরে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে পারবে ‘মৎস্য-৬০০০’। এই লক্ষ্যমাত্রা রেখে এগোনো হলেও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সে ৯৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ওই গভীরে থাকতে সক্ষম। তার ভিতরে বিজ্ঞানীদের লাইফ সাপোর্ট, নেভিগেশন সিস্টেম, রোবোটিক আর্ম, নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা ইত্যাদি থাকবে। মহাসাগরের তলদেশে জীববৈচিত্র, খনিজ সন্ধানের পাশাপাশি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির অনুসন্ধান এবং জলের লবণ দূর করার ক্ষেত্রেও এই অভিযান দিশা দেখাতে পারে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের দাবি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Indian Ocean National Institute of Ocean Technology

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy