আমদাবাদে বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি ভেঙে পড়ার পিছনে অন্তর্ঘাত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বিশেষ করে ওই দুর্ঘটনার পিছনে খলিস্তানি সন্ত্রাসী গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনের কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে এনআইএ-সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের ভূমিকাও।
প্রাথমিক ভাবে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চর্চা হচ্ছে দু’টি ইঞ্জিনে পাখি ঢুকে সেগুলির কর্মক্ষমতা হারানো, বিমানের ডানায় যে ফ্ল্যাপ থাকে সেগুলি ঠিক ভাবে কাজ না করা, তেলে অশুদ্ধি থাকার ফলে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলি। এই সব ক’টি বিষয়ের সঙ্গে যান্ত্রিক বা পাইলটের ত্রুটির সম্ভাবনা জড়িত। কিন্তু যে হেতু খলিস্তানি সন্ত্রাসীরা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল, সেই কারণে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মতে, ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেছেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র সূত্র জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা কম। কারণ, আপাত ভাবে বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির দিকেই মূলত আঙুল উঠেছে। কিন্তু তদন্ত যে হেতু একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তাই অন্তর্ঘাত-সহ সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত কাল দুপুরে দুর্ঘটনার পরেই পন্নুনের ভূমিকা খতিয়ে দেখা শুরু করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। নিষিদ্ধ খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘শিখ ফর জাস্টিস’ (এসএফজে)-এর ওই নেতা গত ১-১৯ নভেম্বর পর্যন্ত যাত্রীদের এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে না চড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই সময়ে পন্নুন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে হামলা চালানোর হুমকিও দেন। সেই সময়ে কোনও হামলা হয়নি। কিন্তু গত কাল যে হেতু এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানই ভেঙে পড়ে, তাই এর পিছনে পন্নুনের হাত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর বদলা নিতে মুখিয়ে রয়েছে পাক জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। ওই বিমান দুর্ঘটনার পিছনে পাক মদতে পুষ্ট কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী রয়েছে কি না, তা-ও তদন্তে দেখা হচ্ছে।
এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) ওই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে। সূত্রের মতে, ব্ল্যাক বক্সের তথ্য উদ্ধার এখন প্রথম লক্ষ্য গোয়েন্দাদের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)