Advertisement
E-Paper

ঘটনাস্থল থেকে মিলেছে দু’টি কার্তুজ! বিস্ফোরকও দু’ধরনের, ‘মিলিটারি-গ্রেড’ রাসায়নিকের সাহায্যেই বিস্ফোরণ দিল্লিতে?

সোমবারের বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বিস্ফোরকের ধরন সম্পর্কে ফরেন্সিক দল এখনও বিস্তারিত রিপোর্ট দেয়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের সংখ্যা বিবেচনা করে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মিলিটারি-গ্রেডের বিস্ফোরক নিয়ে ঘুরছিলেন ওই সন্দেহভাজন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৩০
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলের দৃশ্য।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলের দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।

দিল্লির লালকেল্লা এলাকায় বিস্ফোরণে কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, লালকেল্লার কাছে ঘটনাস্থল থেকে দু’টি তাজা কার্তুজ এবং দু’ধরনের বিস্ফোরকের নমুনা পাওয়া গিয়েছে। ফরেন্সিক সূত্রের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে যে দু’টি কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে নুমনা পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে একটি অ্যামেনিয়াম নাইট্রেটের মতো কোনও রায়াসনিক হতে পারে। তবে দ্বিতীয় বিস্ফোরকের প্রকৃতি সম্পর্কে কোনও সুস্পষ্ট তথ্য মেলেনি। পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

সোমবারের বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বিস্ফোরকের ধরন সম্পর্কে ফরেন্সিক দল এখনও বিস্তারিত রিপোর্ট দেয়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের সংখ্যা বিবেচনা করে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মিলিটারি-গ্রেডের বিস্ফোরক নিয়ে ঘুরছিলেন ওই সন্দেহভাজন। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সম্ভবত পিইটিএন (পেন্টেরিথ্রিটল টেট্রানাইট্রেট), সেমটেক্স বা আরডিএক্স-এর মতো শক্তিশালী বিস্ফোরক ছিল ওই গাড়িতে। এগুলির কোনও ক্ষেত্রেই বিস্ফোরণে পেলেট কিংবা শার্পনেল প্রয়োজন হয় না। তদন্তে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং ডিটোনেটরের সম্ভাব্য ব্যবহারেরও ইঙ্গিত মিলেছে। কারণ, বিস্ফোরণের পরেই নাকি কমলা রঙের আগুনের শিখা দেখা গিয়েছিল, যা সাধারণত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে দেখা যায়।

তবে এ সবই এখনও রয়েছে অনুমানের পর্যায়েই। এ বিষয়ে ফরেন্সিকের মতামতও চেয়েছেন তদন্তকারীরা। এখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে দু’ধরনের বিস্ফোরক মিলেছে। তার মধ্যে প্রথমটি সম্ভবত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। অন্যটি কী, তা এখনও জানা যায়নি। অন্তত ৪২টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সোমবার দিনভর ‘অভিযানে’ উদ্ধার হয়েছিল বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। তাতেই সতর্ক হয়ে যান সন্দেহভাজনেরা। তা ছাড়া, বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত ২,৯০০ কেজি রাসায়নিক উদ্ধারের পরেই সম্ভবত আতঙ্কিত হয়ে অন্যত্র পালানোর চেষ্টা করছিলেন সন্দেহভাজনেরা। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের অনুমান, আত্মঘাতী হামলা নয়, বরং স্থানান্তরনের সময় অসাবধানতাবশতই বিস্ফোরণ ঘটেছিল দিল্লিতে। প্রাথমিক তদন্তের পর আরও জানা গিয়েছে, ইম্প্রোভাইজ়ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)-টিতেও কিছু গলদ ছিল। আর সে কারণেই মিলিটারি-গ্রেড, অর্থাৎ সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত বিস্ফোরকের সমমানের বিস্ফোরক থাকা সত্ত্বেও ‘অপরিণত’ আইইডি-র প্রভাব বেশি দূর ছড়ায়নি। না-হলে বিস্ফোরণ আরও প্রাণঘাতী হতে পারত।

বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িটির গত দিনকয়েকের গতিবিধিও আতশকাচের তলায় রেখেছেন তদন্তকারীরা। বিস্ফোরণ হওয়ার আগে গাড়িটি কোথায় কোথায় ঘুরেছিল— সেই সূত্র খুঁজে বার করার চেষ্টা চলছে। সূত্রের খবর, সোনু নামে ফরিদাবাদের এক ডিলারের কাছ থেকে গত ২৯ অক্টোবর গাড়িটি কিনেছিলেন উমর মহম্মদ (বিস্ফোরণের আগে গাড়িটি চালাতে দেখা গিয়েছিল যাঁকে)। তার পর ১০ নভেম্বর পর্যন্ত গাড়িটি ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কিংয়ে দাঁড় করানো ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে ১০ নভেম্বর সকালে সেখান থেকে গাড়িটি নিয়ে বেরোতে দেখা গিয়েছে উমরকে। ঘটনাচক্রে সেই দিনই বিস্ফোরণ ঘটে। তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, লালকেল্লায় আসার আগে দিল্লির দুই ব্যস্ততম জায়গা কনট প্লেস এবং ময়ূর বিহারে দেখা গিয়েছিল গাড়িটিকে। ফলে দিল্লির অন্য কোথাও প্রকৃতই আত্মঘাতী হামলার ছক ছিল কি না চালকের, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

Delhi Explosive RDX IED
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy