Advertisement
E-Paper

ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি! চুক্তি চূড়ান্ত হতেই প্রতিবাদ নিউ জ়িল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রীর

সোমবার সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “আমরা মনে করছি ভারত-নিউ জ়িল্যান্ড মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি মুক্তও নয়, স্বচ্ছও নয়। এটা নিউ জ়িল্যান্ডের জন্য একটা বাজে চুক্তি।”

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:২০
(বাঁ দিকে) নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাক্সন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাক্সন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি (ফরেন ট্রেড এগ্রিমেন্ট বা এফটিএ) নিয়ে নিউ জ়িল্যান্ডের শাসকজোটে অনৈক্যের সুর। নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী চুক্তি নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত হওয়ার কথা জানানোর পরেই প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করলেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী। দাবি করলেন, এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে নিউ জ়িল্যান্ডের লাভের তুলনায় লোকসানই বেশি হবে।

সোমবার যৌথ ভাবে দু’দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করার কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাক্সন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নিউ জ়িল্যান্ড থেকে যে সমস্ত পণ্য ভারতে আমদানি হয়, তার ৯৫ শতাংশের ক্ষেত্রেই হয় শুল্ক হ্রাস, নয় পুরোপুরি শুল্কমুক্ত করবে নয়াদিল্লি। চুক্তি কার্যকর হওয়ার দিন থেকেই নিউ জ়িল্যান্ডের রফতানি করা ৫০ শতাংশ পণ্যের উপর এই ছাড় প্রযোজ্য হবে। অন্য দিকে, ভারত থেকে নিউ জ়িল্যান্ডে রফতানি হওয়া কোনও পণ্যের ক্ষেত্রেই আর শুল্ক লাগবে না। ফলে ওই দেশের বাজারে ভারতীয় পণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই থাকবে। যদিও ডেয়ারি শিল্পকে এই চুক্তির বাইরে রাখা হয়েছে। আর তা নিয়েই আপত্তি তুলেছেন নিউ জ়িল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স।

পিটার্সের দাবি, এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে নিউ জ়িল্যান্ডের রফতানিনির্ভর শিল্প, বিশেষত ডেয়ারি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সোমবার সমাজমাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “আমরা মনে করছি ভারত-নিউ জ়িল্যান্ড মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি মুক্তও নয়, স্বচ্ছও নয়। এটা নিউ জ়িল্যান্ডের জন্য একটা বাজে চুক্তি। এখানে অনেক কিছু দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিনিময়ে নিউ জ়িল্যান্ডের বাসিন্দারা তাঁদের প্রাপ্য পাবেন না।”

নিউ জ়িল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রী ‘নিউ জ়িল্যান্ড ফার্স্ট’ নামের জাতীয়তাবাদী দলের নেতা। প্রস্তাবিত চুক্তিতে যে ভাবে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভারতীয় পেশাদারদের নিউ জ়িল্যান্ডের ভিসা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তারও বিরোধিতা করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, শাসকজোটের প্রধান শরিক দল ন্যাশনাল পার্টি (নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লাক্সন যে দলের সদস্য)-র কাছে তিনি এই চুক্তি নিয়ে তাড়াহুড়ো না করার আর্জি জানিয়েছিলেন। বরং সময় নিয়ে বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে দর কষাকষির পথে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও দ্রুততার সঙ্গে ওই ‘নিম্নমানের’ চুক্তি করা হয়েছে দাবি তাঁর। নিউ জ়িল্যান্ডের পার্লামেন্টে তাঁরা এই চুক্তিতে সিলমোহর দেওয়ার বিরোধিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন নিউ জ়িল্যান্ডের বিদেশমন্ত্রী। ফলে এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

২০২২ সালে নিই জ়িল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে সে দেশের শাসকদল ন্যাশনাল পার্টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, তারা ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত করবে। চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য গত মার্চ মাসে ভারতে এসেছিলেন নিউ জ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। তার পর গত ন’মাস ধরে দুই দেশের প্রতিনিধিরা এই বিষয়ে কথা এগিয়ে নিয়ে যান। সোমবার নয়াদিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানান, এই চুক্তির ফলে দেশের কৃষি, পর্যটন, গবেষণা, শিক্ষার মতো ক্ষেত্র উপকৃত হবে।

New Zealand Narendra Modi Trade Deal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy