Advertisement
E-Paper

গিলানির বিরুদ্ধে এফআইআর, এনআইএ তল্লাশি কাশ্মীর, দিল্লিতে

উপত্যকায় অশান্তি ছড়াতে পাক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ বহু দিনের। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা(এনআইএ)-র একটি বিশেষ দল কাশ্মীরের ১৪টি জায়গায় অভিযানে নামে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ১১:১২
হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি।— ফাইল চিত্র।

হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি।— ফাইল চিত্র।

উপত্যকায় অশান্তি ছড়াতে পাক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ বহু দিনের। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা(এনআইএ)-র একটি বিশেষ দল কাশ্মীরের ১৪টি জায়গায় অভিযানে নামে। পাশাপাশি দিল্লির গ্রেটার কৈলাস, পীতমপুরা, বাল্লিমারান এবং চাঁদনি চক-সহ আটটি জায়গায় তল্লাশি চালায় তদন্তকারী দলটি। এনআইএ সূত্রে খবর, কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

বহু দিন ধরেই কখনও গোপন সূত্র মারফত্, কখনও স্টিং অপারেশন, কখনও বা টেলি-কথোপকথনের ভিত্তিতে একটা সন্দেহ দৃঢ় হচ্ছিল যে উপত্যকায় টাকা ছড়াচ্ছে পাক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি। এই কাজে অভিযোগ উঠেছিল লস্কর-ই-তইবার বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ উঠেছিল, লস্কর প্রধান হাফিজ সইদের পাঠানো টাকা হুরিয়ত নেতাদের কাছে পৌঁছচ্ছে। অশান্তি ছড়াতে সেই টাকাই নাকি ব্যবহার করছেন ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে সরকারি ভাবে গত মে মাসেই তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয় এনআইএ-কে। তদন্তে মেনে তারা জানতে পারে, ফালাহ-ই-ইনসানিয়ত ফাউন্ডেশন, অল রহমত ট্রাস্টের মতো বেশি কিছু চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে উপত্যকায় কোটি কোটি টাকা ঢালছে লস্কর ও জইশের মতো পাক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি। উপত্যকায় জঙ্গিদের মদত দিতেই এই সংস্থাগুলি নাকি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের ব্যবহার করছে।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে মাথাব্যথা ‘বেডরুম জেহাদি’

প্রাথমিক তদন্তের পর, জঙ্গি সংগঠনগুলিকে আর্থিক সাহায্য করার অভিযোগে সৈয়দ আলি শাহ গিলানি-সহ চার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে এনআইএ। গিলানি ছাড়া বাকি নেতারা হলেন, নইম খান, গাজি জাভেদ বাবা এবং ফারুক আহমেদ দার। এই নইম খানকেই একটি টিভি চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে পাকিস্তানের কাছ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করতে দেখা গিয়েছিল। তার পরই নইমের বাড়িতে তল্লাশি চালায় এনআইএ। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, নইম খান, ফারুক আহমেদ দার এবং জাভেদ আহমেদ বাবা-কে জেরা করার পরই এ দিন কাশ্মীরের ১৪টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। শুক্রবার রাতে গিলানির বাড়িতেও তল্লাশিতে যায় এনআইএ। পাশাপাশি, হুরিয়ত কনফারেন্স-এর বেশ কিছু নেতার বাড়িতেও তল্লাশি চালায় তদন্তকারী সংস্থাটি।

এমআইএ-র এক আধিকারিক জানান, ফালাহ-ই-ইনসানিয়ত ফাউন্ডেশন (এফআইএফ) এবং আল রহমত-এর মতো চ্যারিটি অর্গানাইজেশনগুলি কাশ্মীরে জঙ্গিদের মদত দিতে তাদের কর্মীদের কাজে লাগাচ্ছে। আল রহমত ট্রাস্ট ইদের নাম করে প্রচারপত্র বিলি করছে। কিন্তু সংগৃহীত সেই টাকা ব্যবহার হচ্ছে উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, এফআইএফ পাকিস্তানের ক্রমবর্ধনশীল একটি এনজিও। সমাজসেবার নামে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে সন্ত্রাসের কাজে লাগাচ্ছে। ২০১২-র একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিতে ৭৮ কোটি পাকিস্তানি টাকা ব্যবহার হয়েছিল।

গত বছর হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর উপত্যকা। পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে হাতে পাথর নিয়ে পথে নামেন কাশ্মীরের যুবকেরা। তখনই অভিযোগ উঠেছিল, এর নেপথ্যে রয়েছে পাক মদত। স্পষ্ট করে বলতে গেলে, লস্কর। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, মূলত হাওয়ালার মাধ্যমে হুরিয়ত নেতাদের ওই টাকা পাঠানো হতো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা কাশ্মীরে ঢুকিয়েছে পাকিস্তান। যা মূলত নিরাপত্তা বাহিনীর ওপরে পাথর ছোড়া, স্কুল ও সরকারি ভবনে আগুন লাগানোর জন্য যুবকদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এনআইএ তল্লাশির মধ্যেও অবশ্য সীমান্ত সন্ত্রাস থামার কোনও লক্ষণই নেই। সীমান্তে ফের সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করল পাক সেনা। ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে ১১টা নাগাদ জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে সেনাচৌকি লক্ষ্য করে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ও মর্টার থেকে গোলাবর্ষণ করে পাক সেনা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনারাও।

গত বৃহস্পতিবারেই পুঞ্চও রাজৌরিতে পাক সেনার গোলাবর্ষণে নিহত হন জেনারেল ইঞ্জিনিয়ারিং রিজার্ভ ফোর্স-এর এক কর্মী। তবে সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, শুক্রবারে পাক সেনার গুলিবর্ষণে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

Terrorism Syed Ali Shah Geelani সৈয়দ আলি শাহ গিলানি Hurriyat Leaders হুরিয়ত কনফারেন্স NIA এনআইএ Jammu & Kashmir জম্মু-কাশ্মীর Funding for Terrorism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy