কাশ্মীরের পহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় হামলাকারী চার জঙ্গি এখনও দক্ষিণ কাশ্মীরেই রয়েছে বলে মনে করছেন এনআইএ গোয়েন্দারা। এনআইএ সূত্রের মতে, সেনা ও পুলিশ বড় মাপের তল্লাশি অভিযান চালালেও জঙ্গিরা সম্ভবত এখনও গভীর জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে।
সূত্রের মতে, এখন পাকিস্তানের তরফে কোনও সাহায্য পাওয়ার উপায় নেই। সম্ভবত ওই জঙ্গিদের কাছে বেশ কিছু দিনের খাবার ও অন্য সামগ্রী আছে। তাই এখনও ভারতীয় বাহিনীর নজর এড়িয়ে লুকিয়ে থাকতে পারছে। পাশাপাশি তারা যোগাযোগের জন্য যে সব যন্ত্র ব্যবহার করছে, তাতে সিম কার্ড নেই। ফলে তাদের কথোপকথনে আড়ি পাতা কঠিন। সূত্রের মতে, হামলার আগে ভারতীয় গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে জঙ্গিরা অন্তত তিনটি স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করেছিল। পর্যটকদের উপরে হামলার আগে জঙ্গিরা চারটি এলাকায় নজরদারি করেছিল বলে দাবি এনআইএ সূত্রের।
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, পর্যটকদের যাতায়াত বেশি এমন চারটি জায়গায় নজরদারি চালিয়েছিল জঙ্গিরা। বৈসরন ছাড়াও সেই তালিকায় রয়েছে আরু উপত্যকা, বেতাব উপত্যকা ও একটি স্থানীয় বিনোদন পার্ক। শেষ পর্যন্ত কম বাহিনী মোতায়েন থাকায় তারা বৈসরন উপত্যকাকে বেছে নেয় বলে মত গোয়েন্দাদের। গোয়েন্দাদের দাবি, বিগত কয়েক দিনে কাশ্মীরে আটক করা জঙ্গি সহযোগীদের (ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার) জেরা করে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, বৈসরনে হামলার দু’দিন আগে থেকে সেখানেই থাকছিল জঙ্গিরা।
আজ ফের বৈসরন উপত্যকায় গিয়েছিলেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। পহেলগাম-তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পরে এই প্রথম মাঠে নেমে বড় মাপের তদন্ত চালাল এনআইএ। অভিযান তদারকির জন্য পহেলগামে আসেন এনআইএ-র অধিকর্তা সদানন্দ দাটে। গত কাল রাতেই এই হামলার প্রেক্ষিতে একটি নতুন এফআইআর দায়ের করেছে এনআইএ। আজ বৈসরনে গোটা হামলার পুনর্নির্মাণের জন্য এলাকার ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, উপগ্রহ চিত্র, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও গোয়েন্দাদের তোলা ফুটেজের মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রের মডেল তৈরি করা হয়েছে।
অন্য দিকে, পহেলগাম-কাণ্ডে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা আর্জি খারিজ করে আবেদনকারীদের ভৎর্সনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কাশ্মীরের বাসিন্দা ফতেশকুমার সাহু, মহম্মদ জুনেইদ ও ভিকি কুমার সুপ্রিম কোর্টে ওই মামলা করেছিলেন। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের আগে আপনারা বাহিনীর মনোবল ভাঙতে চান? আমরা কবে থেকে সন্ত্রাস মামলায় তদন্তে নজরদারির দক্ষতা অর্জন করলাম? জনস্বার্থ মামলা করার আগে দায়িত্বশীল হোন। দেশের প্রতিও আপনাদের দায়িত্ব আছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)