প্রতি বছর জন্মদিনে স্ত্রী কিছু না কিছু উপহার পাঠাতেন সজিশ পুথুরকে। গত বছরে পাঠিয়েছিলেন একটি টি-শার্ট। এ বারে ২৮ মে দিনটা অবশ্য কেরলের বাড়িতে স্ত্রীকে ছাড়াই কাটবে বছর ছত্রিশের ওই যুবকের। কারণ, গত সাত দিনে আমূল বদলে গিয়েছে সজিশের পৃথিবী। মারণ নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার মারা গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী, কেরলের পেরামব্রা হাসপাতালের নার্স লিনি পুতুসেরি। যে সত্যিটা এখনও ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারেননি সজিশ।
কেরলের বাড়ি থেকে ফোনে সজিশ বলছেন, ‘‘এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না যে কী করব, কী করা উচিত। বাড়িতে থাকলে মাঝেমাঝেই মনে হচ্ছে, ও (লিনি) বোধহয় হাসপাতালে ডিউটি করতে গিয়েছে, একটু পরেই এসে পড়বে!’’
কেরলে নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের সেবা করতে গিয়ে নিজেই ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন লিনি। গত সোমবার পেরামবারার মেডিক্যাল হাসপাতালে মারা যান ৩১ বছরের ওই নার্স। স্বামীকে লেখা শেষ চিঠিতে পাঁচ বছরের রিতুল এবং দু’বছরের সিদ্ধার্থের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু মা ছাড়া কী ভাবে সামলাবেন দুই ছেলেকে, তা নিয়ে ভেবেও কূল কিনারা পাচ্ছেন না সজিশ। বলছেন, ‘‘বড় ছেলেকে বলেছি, হয়তো কিছু বুঝেওছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ছোটটিকে নিয়ে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় মায়ের জন্য বায়না করছে। তখন বুঝতে পারছি না ওকে কী ভাবে সামলাব।’’ সন্তানদের মুখ চেয়েই বাহরিনে অ্যাকাউন্ট্যান্টের চাকরিতে ইতি টানার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছেন সজিশ। বলছেন, ‘‘কেরল সরকার কী চাকরি দেবে, তা জানি না। কিন্তু এ ছাড়া আমার আর কোনও উপায় নেই।’’