Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
National News

দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন নীরব? জানে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

নীরব মোদী। ছবি- সংগৃহীত।

নীরব মোদী। ছবি- সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৯:০৯
Share: Save:

পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি)-এ প্রতারণার অভিযোগ সিবিআই-এর কাছে যাওয়ার আগেই, দেশ ছেড়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন ধনকুবের হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী। দেশ ছেড়েছেন তাঁর স্ত্রী, ভাই এবং এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীও।

পিএনবি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল মেহতা বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘এই প্রতারণার ঘটনাটা জানা যায় এ বছর জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে। তার পরেই ৩০ জানুয়ারি সিবিআইয়ের কাছে মামলা দায়ের করা হয়। তার আগের দিন যোগাযোগ করা হয় সিবিআইয়ের সঙ্গে।’’

কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রকে উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, তার অনেক আগেই বিদেশে গিয়ে গা-ঢাকা দিতে শুরু করেন নীরব, তাঁর স্ত্রী, ভাই, সহযোগীরা। নীরব দেশ ছেড়ে পালান এ বছর জানুয়ারির ১ তারিখে। ওই দিনই আলাদা ভাবে দেশ ছেড়ে পালান নীরবের ভাই নিশাল। নিশাল বেলজিয়ামের নাগরিক। নীরবের মার্কিন নাগরিক স্ত্রী অ্যামি দেশ ছেড়ে যান জানুয়ারির ৬ তারিখে। আর গত ৪ জানুয়ারি পালান নীরবের ‘বিজনেস পার্টনার’ মেহুল চোকসি। মেহুল, ‘গীতাঞ্জলি জুয়েলারি চেন’-এর ভারতীয় প্রোমোটার।

নীরব আর তাঁর ঘনিষ্ঠরা যদি সত্যিই ওই সময় দেশ ছেড়ে নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছে গিয়ে থাকেন, তবে তার অনেক পর, গত ৩১ জানুয়ারি, তাঁদের ধরার জন্য ‘লুক-আউট’ নোটিস জারি করে সিবিআই। পরে ‘লুক-আউট’ নোটিস জারি করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-ও।

নীরব এখন সুইৎজারল্যান্ডে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র খবর। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তা বলছে না। নীরব যে দেশ ছেড়ে উধাও হয়ে গিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ তাঁদের হাতে নেই বলে জানাচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

গোটা ঘটনায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুনীল মেহতার বৃহস্পতিবারের বিবৃতি নিয়েও। তিনি জানিয়েছেন, জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহেই প্রথম এই প্রতারণার ঘটনাটা তাঁদের নজরে আসে। তাঁরা জানতে পারেন, ২০১১ সাল থেকেই এই প্রতারণা চলছে। ঘটনাটা নজরে আসতেই তাঁরা দু’জনের নাম জানতে পারেন। দু’জনেই ব্যাঙ্কের কর্মী। এক জন অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ম্যানেজার গোকুল নাথ শেট্টি। অন্য জন প্রবীণ অফিসার এসডব্লিউও মনোজ হনুমন্ত খারাট। জানা যায়, তাঁরাই নিয়ম ভেঙে বিপুল অঙ্কের ঋণ পাইয়ে দিতে পিএনবি-কে গ্যারান্টার করে দিয়েছিলেন। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়। ব্যাঙ্কের আরও জনা দশেক কর্মীর ভূমিকাও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে ইডি।

আরও পড়ুন- পিএনবি প্রতারণা: হিরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে, শো রুমে তল্লাশি​

আরও পড়ুন- মোদী অরুণাচলে যেতেই বেজিং বেসুরো, দিল্লিকে কড়া হুঁশিয়ারি​

পিএনবি কর্তৃপক্ষ প্রথম এই ঘটনার কথা গত ১৬ জানুয়ারি জানতে পারলেও কেন সিবিআইয়ের কাছে তাদের অভিযোগ দায়ের করতে এত দেরি হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

লক্ষণীয় বিষয় হল, পিএনবি কর্তৃপক্ষের কাছে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসা এবং সিবিআই-তে তাদের অভিযোগ দায়েরের মাঝে, দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গ্রুপ ফোটোয় দেখা গিয়েছে নীপব মোদীকে। তবে কি বিপদ বুঝে নীরব সপরিবারে পালিয়ে যাওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে উঠে ছবি তোলার ‘হিম্মত’ তিনি দেখিয়েছিলেন? সবই এখন প্রশ্ন আকারেই রয়েছে।

দাভোসের ফোটো নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। নীরবদের কেন্দ্র আড়াল করে রেখেছিল কি না এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সীতারাম ইয়েচুরি। মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। উল্টো দিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ কংগ্রেস আমলের নানা দুর্নীতির কথা তুলে বলেছেন, পিএনবি-র কোনও অবৈধ কাজ তাঁদের আমলে হয়নি। যা হয়েছে সব আগের জমানায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nirav Modi PNB CBI নীরব মোদী
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE