ভারতে ফেরার কথা শুনে ভীত নীরব। ফাইল ছবি।
তাঁকে দেশে ফেরাতে চেষ্টার কসুর করছে না ভারত সরকার। লন্ডনের জেলে বসে তা নিয়েই নিজের উদ্বেগের কথা জানালেন পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) কেলেঙ্কারিতে মুখ্য অভিযুক্ত হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদী। নিজের মনোবিদকে নীরব জানিয়েছেন, ভারতের জেলে নিয়ে যাওয়া হলে হয় তিনি খুন হবেন, কিংবা আত্মঘাতী হবেন।
তেরো হাজার কোটি টাকার পিএনবি কেলেঙ্কারির মুখ্য অভিযুক্ত ৫১ বছরের নীরব এখন রয়েছেন লন্ডনের জেলে। তাঁকে দেশে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারত সরকারের হয়ে এই মামলায় লড়ছে ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস (সিপিএস)। সেই সংস্থার মনোবিদরাও নীরবের সঙ্গে জেলে গিয়ে কথা বলেছেন। যদিও নীরবের পক্ষের মনোবিদের বক্তব্যের সঙ্গে মিলছে না সিপিএসের মনোবিদের বক্তব্য।
আপাতত ইংল্যান্ডের অন্যতম বড় জেল, লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থে রয়েছেন নীরব। সেখানে গিয়ে কথা বলেছেন তাঁর মনোবিদ অ্যান্ড্র্রু ফরেস্টার। তিনিই লন্ডন হাই কোর্টকে জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলের ১২ নম্বর ব্যারাক থেকে এমন সমস্ত জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে যা ব্যবহার করে আত্মঘাতী হতে পারেন কেউ। কিন্তু তবুও ভয় যাচ্ছে না তেরো হাজার কোটি টাকা নয়ছয়ে অভিযুক্ত নীরবের। তিনি মনে করছেন, পরিস্থিতি যাই হোক, জেলেই মৃত্যু হবে তাঁর।
অ্যান্ড্রু আদালতকে জানিয়েছেন, নীরব কেবলই ভয় পেয়ে চলেছেন। বলছেন, ‘‘ওখানে আমাকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে কিংবা আমি নিজেই জেলের মধ্যে আত্মঘাতী হব।’’ মনোবিদের দাবি, নীরব এতই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন যে তাঁকে দু’বার হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি করতে হয়েছে। চার বার তাঁর উপর বিশেষ ভাবে নজর রাখতে হয়েছে যাতে তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টা না করেন। নিজেকে নিয়ে নীরব চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন বলেও আদালতকে জানিয়েছেন তাঁর মনোবিদ। তাঁর আশঙ্কা, এই মুহূর্তে নীরব আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে পড়েছেন। ভারতের জেলে পাঠালে সেই প্রবণতা আরও বেড়ে যেতে পারে।
কিন্তু ভারত সরকারের পক্ষে সিপিএসের হেলেন ম্যালকম কেসি পাল্টা আদালতকে জানান, ভারতের জেলে সর্বদা এক জন মনোবিদ উপস্থিত থাকবেন। নীরবকে যে সেলে রাখা হবে সেখানে তিনি থাকবেন আরও এক জনের সঙ্গে। তাঁর আইনজীবী রোজ দেখা করতে পারবেন। সপ্তাহে এক দিন পরিবারের লোকেদের সঙ্গেও সাক্ষাতের ব্যবস্থা রাখা হবে। সিপিএসের মনোবিদ আদালতে দাবি করেছেন, নীরব এই মুহূর্তে সামান্য হতাশায় ভুগছেন। কারণ ভারতের জেল সম্পর্কে ঠিক ধারণা তাঁর নেই। নিজে সেখানে গেলেই এ ব্যাপারে ভয় ভাঙবে।
যদিও নীরবের আইনজীবী এডওয়ার্ড ফিৎজ়েরাল্ড কেসি পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, ইংল্যান্ড থেকে ভারতে প্রত্যর্পিত কোনও বন্দি সেখানে গিয়ে ভাল অবস্থার মধ্যে রয়েছেন, এমন কারও কথা কোনও দিন শুনেছেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy