Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Nirbhaya Rape Case

শেষ ইচ্ছে জানায়নি নির্ভয়ার চার ধর্ষক

বিশেষজ্ঞদের কারও কারও সন্দেহ, আইনজীবীরা হয়তো এখনও ফাঁসি স্থগিতের ব্যাপারে আশ্বাস দিচ্ছেন আসামিদের।

নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিত। —ফাইল চিত্র

নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিত। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫১
Share: Save:

রুটিন প্রশ্নগুলো করা হয়েছিল। করতেই হয় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে। কিন্তু কোনও উত্তর দেয়নি মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, অক্ষয় সিংহ ও পবন গুপ্ত।

নির্ভয়া ধর্ষণ-খুনের চার আসামির ফাঁসি হওয়ার কথা ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায়। তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, পরিবারের সঙ্গে কখন শেষ বারের মতো দেখা করতে চায় তারা? সে ক্ষেত্রে কার সঙ্গে দেখা করতে চায়? তারা কাউকে নিজেদের সম্পত্তি উইল করে দিতে চায় কি না, জানতে চাওয়া হয়েছিল তা-ও। জেলের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, ফাঁসির ৯ দিন আগেও এ বিষয়ে তাঁদের কিছু জানায়নি চার সাজাপ্রাপ্ত। জেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘চার আসামির পরিবার এখন তাদের সঙ্গে সপ্তাহে দু’বার দেখা করতে পারে। কিন্তু শেষ দেখা কবে হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি, কারণ আসামিরা উত্তর দেয়নি।’’

বিশেষজ্ঞদের কারও কারও সন্দেহ, আইনজীবীরা হয়তো এখনও ফাঁসি স্থগিতের ব্যাপারে আশ্বাস দিচ্ছেন আসামিদের। হতে পারে, সেই কারণেই শেষ ইচ্ছে বা উইল করার ব্যাপারে এখনই কিছু জানাতে চাইছে না তারা। আদালতের নির্দেশ, অপরাধ যে-হেতু তারা একসঙ্গে করেছিল, তাই ফাঁসিও একসঙ্গে হবে। কিন্তু আইন মোতাবেক, চার জনের মধ্যে কোনও এক জনের আবেদন বিবেচনাধীন থাকলে বাকিদের ফাঁসিও পিছিয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই অন্যতম আসামি মুকেশ সিংহ রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষার আবেদন করার পরে ফাঁসির তারিখ ২২ জানুয়ারি থেকে পিছিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি ধার্য করতে হয়েছে। কারণ, রাষ্ট্রপতি ১৭ জানুয়ারি মুকেশের আবেদন খারিজ করার পর থেকে ১৪ দিনের মধ্যে তাদের ফাঁসি দেওয়া যেত না।

বিনয় ও মুকেশের তরফে রায় সংশোধনের আর্জি খারিজ হয়েছে। বিনয়ের তরফে প্রাণভিক্ষার আর্জিও রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছে। যদিও আরও একটি চিঠিতে বিনয়ের দাবি, সে ওই আর্জি জানায়নি। কিন্তু পবন ও অক্ষয় এখনও সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি জানায়নি। সেই আর্জি যে কোনও সময়েই জানানো যায়। আর্জি খারিজ হলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার রাস্তা খোলা থাকছে তাদের কাছে। অনেকে মনে করছেন, এই দু’টি পথে পবন ও অক্ষয়ের আইনজীবীরা শেষ মুহূর্তে ফাঁসি পিছোনোর চেষ্টা করতে পারেন। ঠিক এই পরিস্থিতির কথা ভেবেই গত কাল সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছিল, ফাঁসি দেওয়ার প্রশ্নে সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হোক।

তিহাড়ের ৩ নম্বর জেলের আলাদা আলাদা সেলে রয়েছে চার জন। সেখানেই হবে ফাঁসি। চার জনের ওজন অনুযায়ী তৈরি ‘ডামি’ বস্তা দিয়ে ফাঁসির মহড়াও হয়ে গিয়েছে গত সপ্তাহে। উত্তরপ্রদেশের জেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে দু’জন ফাঁসুড়ে চেয়ে পাঠিয়েছে তিহাড়। জেল সূত্রের খবর, আসামিদের মানসিক অবস্থা যাতে ঠিক থাকে, সেই জন্য রোজই কথাবার্তা বলা হচ্ছে তাদের সঙ্গে।

১ ফেব্রুয়ারি চার আসামির ফাঁসির নির্দেশ যিনি দিয়েছিলেন, দিল্লির সেই অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সতীশকুমার অরোরাকে বদলি করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার পদে এক বছরের ডেপুটেশনে যাচ্ছেন তিনি। গত ২০ তারিখে দিল্লি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের তরফে পাটিয়ালা হাউস কোর্টের জেলা বিচারককে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিচারক অরোরাকে নতুন পদে যোগ দেওয়ার জন্য যেন অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি বদলি হওয়ায় নির্ভয়া মামলা কোন বিচারক শুনবেন, তা এখনও জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nirbhaya Rape Case Death Sentence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE