Advertisement
E-Paper

মোদী ঝড়ে রাশ টেনেই বিহারের চাণক্য নীতীশ

ভোট-রণনীতির তিনটি মোক্ষম চাল। তাতেই বিরোধী শিবিরকে হারালেন বিহারের ‘চাণক্য’ নীতীশ কুমার। • পয়লা চাল, নিজে সরে জিতনরাম মাঁঝিকে মুখ্যমন্ত্রী করা। যা ফাটল ধরায় শত্রুপক্ষের দুর্গে। • দ্বিতীয় চাল, লালুপ্রসাদের সঙ্গে সন্ধি। রাজ্যসভার নির্বাচনে ভেস্তে যায় বিজেপির কৌশল। • তৃতীয় চাল, উপনির্বাচনে জোট লালু ও কংগ্রেসের সঙ্গে। ফল বিহারে মোদী-ঝড়ে লাগাম।

স্বপন সরকার

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৫

ভোট-রণনীতির তিনটি মোক্ষম চাল। তাতেই বিরোধী শিবিরকে হারালেন বিহারের ‘চাণক্য’ নীতীশ কুমার। • পয়লা চাল, নিজে সরে জিতনরাম মাঁঝিকে মুখ্যমন্ত্রী করা। যা ফাটল ধরায় শত্রুপক্ষের দুর্গে। • দ্বিতীয় চাল, লালুপ্রসাদের সঙ্গে সন্ধি। রাজ্যসভার নির্বাচনে ভেস্তে যায় বিজেপির কৌশল। • তৃতীয় চাল, উপনির্বাচনে জোট লালু ও কংগ্রেসের সঙ্গে। ফল বিহারে মোদী-ঝড়ে লাগাম।

যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল গত বছরের শেষের দিকে। সে সময় বিজেপির সঙ্গে ১৭ বছরের সম্পর্ক ছেদ করেন জেডিইউ শীর্ষনেতা। একাই লড়েন লোকসভা নির্বাচনে। কিন্তু ভোট-ময়দানে নরেন্দ্র মোদীর বিজয়রথ রুখতে পারেননি। তবে বিরোধীদের সমালোচনার মুখে রাজনীতির পাশা খেলতে নামেন নীতীশ।

লোকসভা ভোটে দলের ভরাডুবির দায় স্বীকার করে আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন নীতীশ। সেটাই ছিল প্রথম চাল। নীতীশ জানিয়ে দেন, জনমত এবং বিরোধীদের দাবি মেনে এই সিদ্ধান্ত। তবে, বিধানসভা জিইয়ে রাখেন নীতীশ। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে অন্য কেউ সরকার গড়ুক তাঁর এই ঘোষণার পিছনে লুকিয়ে ছিল অন্য রণনীতি। জেডিইউয়ের এক নেতা বলেন, “নীতীশজি জানতেন, তখন কোনও দলেরই সরকার গড়ার মতো সংখ্যা নেই। তাই নিশ্চিন্তে ওই পদক্ষেপ করেন।” এতে নীতীশের নেতৃত্ব নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ প্রশমিত হয়। এর পরই বিহারের রাজনীতিতে ‘অজাতশত্রু’ হিসেবে পরিচিত মুষহার নেতা সম্প্রদায়ের জিতনরামকে গদিতে বসান নীতীশ। তখনকার মতো বন্ধ হয় বিরোধীদের সমালোচনা। নীতীশের দিকে ঘুরে যায় পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের সমর্থন। বিহারবাসীর কাছে তাঁর ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়। জিতনরামকে সমর্থন জানান ‘শত্রু’ লালুপ্রসাদও।

রাজ্যসভার ভোটের আগে পরের দান ফেলেন চাণক্য।

বিরোধীরা অনেক হিসেব কষে মাঠে নেমেছিলেন। নীতীশকে অস্বস্তিতে ফেলে তাঁর দলের পাঁচ বিধায়ককে নিজেদের শিবিরে টেনে নেয় বিজেপি। দলত্যাগী বিধায়করা দাবি করেন, তাঁদের পাশে জেডিইউয়ের অন্তত পঞ্চাশ জন বিধায়ক রয়েছেন। নীতীশ অভিযোগ তোলেন, দিল্লির পরামর্শে তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। বিহারে রাজনৈতিক পরম্পরা ভাঙছে বিজেপি। এর পরই তিনি নতুন ছক কষে আসরে নামেন। সরাসরি যোগাযোগ করেন লালুপ্রসাদের সঙ্গে। আরজেডির সমর্থন নিয়ে দলের তিন প্রার্থীকে জিতিয়ে পাঠান রাজ্যসভায়। ভেস্তে যায় বিরোধীদের পরিকল্পনা।

নীতীশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল বিহারে ১০টি আসনে উপনির্বাচন। লোকসভা ভোটের পর তাঁর কাছে এটা ছিল সম্মানের লড়াই। সে ভাবেই এগোন তিনি।

ভোটের কয়েক দিন আগে দলীয় দফতরে নীতীশ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “বিজেপি আমাকে নিশানা করছে। এর উচিত জবাব ওঁরা পাবে।” সেটা ফাঁকা আওয়াজ ছিল না। কয়েক দিনের মধ্যেই লালুপ্রসাদ, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে জেডিইউ। নীতীশের এই তৃতীয় চালের নেপথ্যেও ছিল জটিল অঙ্ক। জেডিইউয়ের কয়েক জন নেতার কথায়, “নীতীশজি জানতেন, কোর্টের রায়ে লালুপ্রসাদ আপাতত ভোটে লড়তে পারবেন না। আরজেডির অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার নন। তাই নীতীশজির সামনে ভবিষ্যতে কোনও বিপত্তির আশঙ্কা নেই।” তাঁর সেই কৌশলও সফল। তিন চালে মোদী-ঝড় রুখে নীতীশ এখন তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলছেন, নরেন্দ্র মোদীকে তিনি উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, বিজেপির নন্দকিশোর যাদব অবশ্য বলেন, “বিহারের ভোটে নরেন্দ্র মোদীর কোনও ভূমিকা নেই। সব বিষয়ে তাঁকে জড়ানো ঠিক নয়।”

swapan sarkar nitish kumar jdu bjp bihar by election national news latest news online new
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy