সাদা ফুলহাতা শার্ট। কালো ট্রাউজ়ার। মুখ ঢাকা কালো কাপড়ে। দু’হাতে দড়ি বাঁধা। প্রিজ়ন ভ্যান থেকে তাঁকে নামানো হল। তার পর পুলিশি নিরাপত্তায় নিয়ে যাওয়া হল পুরসভা ভোটের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে। এক গ্যাংস্টারের এমনই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। পুণের সেই গ্যাংস্টারের নাম বান্দু আন্দেকর ওরফে সূর্যকান্ত।
তিনি পুণের এক জন কুখ্যাত দুষ্কৃতী। নাতি আয়ুষ কুমারকে খুনের অভিযোগে পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে বন্দি। শুধু বান্দু নন, এই খুনের অভিযোগে জেলবন্দি তাঁর বৌদি লক্ষ্মী উদয়কান্ত আন্দেকর, পুত্রবধূ সোনালি বনরাজ আন্দেকরও। তাঁরা তিন জনে জেল থেকেই পুণে পুরসভা নির্বাচনে মনোনয়ের জন্য আবেদন করেন। পুণের বিশেষ আদালত শর্তসাপেক্ষে সেই আবেদন মঞ্জুর করে। শর্ত দেওয়া হয়, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কোনও র্যালি বা বক্তৃতা করতে পারবেন না।
সেইমতো শনিবার ইয়েরওয়াড়া জেল থেকে প্রিজ়ন ভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে নিয়ে আসা হয়েছিল বান্দুকে। প্রিজ়ন ভ্যান থেকে নামতে নামতেই তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘ভাল কাজ মানেই আন্দেকর। ভোট ফর আন্দেকর’’। তাঁর দু’হাত ছিল বাঁধা। এক পুলিশ অফিসারের হাতে ধরা ছিল সেই দড়ি। তিনি আগে আগে হাঁটছিলেন। পিছনে গ্যাংস্টার বান্দু। তাঁর পিছনে আরও এক পুলিশকর্মী। মনোনয়নপত্র জমা দিতে ঢোকার সময় ‘ভিকট্রি সাইন’ দেখান বান্দু। সূত্রের খবর, ইয়েরওয়াড়া জেল থেকে পুণে পুরসভার ভবানী পেট ওয়ার্ড অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে আসা হয়েছিল বান্দুকে। নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বান্দু, তাঁর বৌদি এবং পুত্রবধূ। সূত্রের খবর, তাঁদের মনোনয়নপত্র অসম্পূর্ণ থাকায় নির্বাচনী আধিকারিক তা বাতিল করে দেন। তবে আরও তিন দিন রয়েছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। ওই সময়ের মধ্যে সঠিক ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে বান্দুদের।
পুণেতে আন্দেকর একটি বড় গ্যাং চালান। ১০ বছর ধরে তাঁদের দৌরাত্ম্য চলছে। ৯০-এর দশকে আন্দেকর পরিবার রাজনীতিতে প্রবেশ করে। পুলিশ সূত্রে খবর, আন্দেকর গ্যাং পরিচালনা করতেন বান্দু। তাঁর দুই ভাই উদয়কান্ত এবং রমাকান্ত আবার পুণে পুরসভার কাউন্সিলর। ১৯৯৮ সালে আন্দেকর পরিবারের এক সদস্য বৎসল আন্দেকর পুণের মেয়র ছিলেন। বান্দুর স্ত্রী রাজশ্রী আবার ২০০৭ এবং ২০১২ সালে পুরসভার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। সূত্রের খবর কংগ্রেস এবং এনসিপি-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে আন্দেকর পরিবারের। বান্দুর বড় ছেলে ২০১৭ সালে এসিপি-র প্রার্থী হয়েছিলেন পুরসভা নির্বাচনে।