ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কি যুদ্ধবিরতি নিয়ে ডিজিএমও (ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস) স্তরের আলোচনা হবে রবিবার? গত কয়েক দিন ধরে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনার ডিজিএমও স্তরে ফোনালাপের কথা নেই! আপাতত বহাল থাকবে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার কোনও তারিখ নেই।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলে ভারত। যদিও পাকিস্তানের দাবি, তারা কোনও ভাবেই পহেলগাঁওয়ের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়! সেই উত্তেজনার আবহেই জঙ্গিদমনে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সূচনা করে ভারত। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কশ্মীরের বেশ কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে গোলাবর্ষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। আকাশপথেও একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালায়। চার দিন ধরে চলা এই সামরিক অস্থিরতা শেষ হয় যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে।
গত ১০ মে বিকেল ৫টা থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। ভারত ও পাকিস্তান— দুই দেশই জানায়, ডিজিএমও স্তরে আলোচনাতেই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ১২ মে আবার দুই দেশের ডিজিএমও আলোচনা করেন ‘হটলাইনে’। কিন্তু তার পর থেকেই বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছিল, ১৮ মে (রবিবার) পর্যন্তই যুদ্ধবিরতি থাকবে দুই দেশের মধ্যে। সেই দিন আবার কথা হবে ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনার ডিজিএমওদের মধ্যে। সেই বৈঠকেই স্থির হবে পরবর্তী পদক্ষেপ!
আরও পড়ুন:
ডিজিএমও স্তরের আলোচনার দাবি নস্যাৎ করল ভারতীয় সেনা। সংবাদ সংস্থা এনআইএ ভারতীয় সেনাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ১২ মে ডিজিএমও স্তরের আলোচনায় যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাই বলবৎ থাকবে। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কোনও তারিখ নেই।
গত ১০ মে বিকেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার পরে ভারত এবং পাকিস্তান দু’দেশই পৃথক ভাবে বিবৃতি দিয়ে সংঘর্ষবিরতিতে সম্মতির কথা জানিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও পাক ফৌজ অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে নিয়ন্ত্রণরেখায় হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই আবহে গত ১২ মে বিকেলে ভারতীয় সেনার ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই পাক সেনার ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লার সঙ্গে হটলাইনে কথা বলেন। এর পরে কিছুটা শান্ত হয় পরিস্থিতি। সেই আলোচনায় একাধিক বিষয় উঠেছিল বলে দাবি সেনা সূত্রে। সীমান্তে যুদ্ধবিরতি বহাল থাকলেও দুই দেশের নেতাদের মধ্যে বাগ্যুদ্ধ অব্যাহত। দুই দেশই একে অপরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে, যদি যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে হামলা চালানো হয়, তবে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে!