চার রাজ্যে শোচনীয় হার। অসম, কেরল হাতছাড়া। তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গে জোট করেও ভাল ফল করতে ব্যর্থ। প্রাপ্তির খাতায় শুধুমাত্র পুদুচেরি। দলের এমন বিপর্যয়ের পর কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী টুইটারে বলেছিলেন, হারের কারণ দলের অন্দরে পর্যালোচনা করা হবে। সবাইকে চমকে দিয়ে পাল্টা টুইট দলের অন্যতম সিনিয়র নেতা দিগ্বিজয় সিংহের। বললেন, পর্যালোচনা অনেক হয়েছে। এবার দলে ‘অস্ত্রোপচার’ প্রয়োজন।
দিগ্বিজয় সিংহের এই টুইটকে সনিয়ার প্রতি কটাক্ষ হিসেবেই দেখছেন কংগ্রেসের অন্য সিনিয়র নেতারা। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয়ের এই খোঁচা বেশ বেনজিরও। দল সম্পর্কে বা অন্যান্য বিষয়ে দিগ্বিজয়ের নানা মন্তব্য একাধিক বার বিতর্কের জন্ম দিয়েছে আগেও। কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর প্রতি কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। কিন্তু সনিয়া গাঁধীর বিরুদ্ধে কখনও কোনও মন্তব্য তিনি করেননি। ২০০৩ সালে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে দলকে জেতাতে না পারার পর রাজনৈতিক সন্ন্যাস ঘোষণা করেছিলেন দিগ্বিজয়। কিন্তু ২০০৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সনিয়া নিজে তাঁকে সন্ন্যাস থেকে বার করে আনেন। লোকসভা নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। সেই থেকে দিল্লির রাজনীতিতে দিগ্বিজয় কংগ্রেসের অন্যতম ক্রাইসিস ম্যানেজার। সনিয়ার প্রতি আনুগত্যও তখন থেকেই আরও বেশি প্রশ্নাতীত। কিন্তু ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর থেকে দেশজুড়ে বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেস পর পর যেমন ধাক্কা খাচ্ছে, তাতে সনিয়াকেও আর রেয়াত করলেন না দিগ্বিজয়।
বৃহস্পতিবার পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পর সনিয়া গাঁধী টুইটারে লেখেন, ‘‘এই পরাজয়ের কারণ আমরা পর্যালোচনা করব এবং নতুন উদ্যম নিয়ে মানুষের সেবায় নিজেদের নিবেদন করব।’’ কংগ্রেস সভানেত্রীর এই টুইটের কয়েক ঘণ্টা পর দিগ্বিজয় সিংহ টুইটারে লেখেন, ‘‘আজকের এই ফল হতাশাজনক কিন্তু অপ্রত্যাশিত নয়। আমরা যথেষ্ট পর্যালোচনা করেছি। এ বার কি দলের মধ্যে একটা বড়সড় অস্ত্রোপচার করা জরুরি নয়?’’
আরও পড়ুন:
বিজেপিতে ‘অচ্ছে দিন’ ফিরল মোদীর
দিগ্বিজয়ের এই মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেসের ভিতরে-বাইরে হইচই শুরু হয়েছে। দলের নেতৃত্বে এবং কর্মপন্থায় বড়সড় রদবদলের পক্ষেই যে দিগ্বিজয় সওয়াল করেছেন, সে কথা স্পষ্ট। এই টুইট নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়িয়েছে সনিয়া গাঁধীরও। দিগ্বিজয়ের সুরে সুর মিলিয়েছেন কেরলের তিরুঅনন্তপুরম থেকে নির্বাচিত কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর। তিনি বলেছেন, ‘‘এই বস্তাপচা পর্যালোচনা থেকে বেরিয়ে এসে এ বার সত্যিই কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy