এ ভাবে ভেঙে পড়লে চলবে না। সকলের জীবনেই ভালমন্দ সময় আসে। ফুটপাথের উপর ঝুঁকে বসে থাকা এক ব্যক্তিকে বোঝাচ্ছিলেন স্থানীয় এক যুবক হরিশ রানা। কিন্তু ওই ব্যক্তি যে বিষপান করেছেন, সেটা তখনও জানতেন না বলে দাবি হরিশের। তিনি লোকটির অবস্থা দেখে তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আচমকাই ক্ষীণ কণ্ঠে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘আমার গলা পর্যন্ত দেনা। জর্জরিত আমি। কোটিপতি আত্মীয়দের কাছে সাহায্য চেয়েও পাইনি। কেউ সাহায্য করতে চায়নি।’’
এই বলেই লোকটি কেঁদে ফেলেন। তার পরেই আচমকা বলেন, ‘‘আমি আর পাঁচ মিনিটেই মরে যাব।’’ প্রত্যক্ষদর্শী তথা স্থানীয় যুবক হরিশ জানান, লোকটির মুখে এ কথা শুনে তিনি আঁতকে উঠেছিলেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই ব্যক্তি মাটিতে পড়ে যান। জ্ঞান হারানোর আগে তিনি এটাও বলে যান, পরিবারের সকলে মিলে একসঙ্গে বিষপান করেছেন। গাড়ির ভিতরে পরিবারের অন্য সদস্যেরা রয়েছেন। তার পরই গাড়ির ভিতর থেকে ছ’জনের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদের শনাক্ত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম প্রবীণ মিত্তল। বাকি ছয় জন তাঁর পরিবারের সদস্য।
আরও পড়ুন:
প্রত্যক্ষদর্শী হরিশ জানিয়েছেন, তিনি রাতে হাঁটতে বেরিয়ে প্রবীণকে ফুটপাথে বসে থাকতে দেখেন। খুব বিধ্বস্ত লাগছিল তাঁকে। প্রবীণের পাশের গাড়িটি চোখে পড়ে। সেই গাড়িতে উঁকি মারতেই দেখা যায় ছ’জন রয়েছেন। হরিশের কথায়, ‘‘দেখে মনে হচ্ছিল তাঁরা ঘুমোচ্ছেন। কিন্তু একটু ভাল করে দেখেই আঁতকে উঠি। সকলের মুখ থেকে গ্যাঁজলা বার হচ্ছিল। তখনই সন্দেহ হয়, কিছু একটা ঘটেছে। তার পরই গাড়ির বাইরে বসে থাকা লোকটিকে জিজ্ঞাসা করি, কী হয়েছে। তখন ওই ব্যক্তি অর্থাৎ প্রবীণ বলেন, ‘আমরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছি। সকলে মিলে বিষ খেয়েছি। আমার ছেলেমেয়ে, বাবা-মা স্ত্রী গাড়ির ভিতরে রয়েছে। আমিও পাঁচ মিনিটে মারা যাব।’’’
এক আত্মীয়ের দাবি, ২০ কোটি টাকা দেনা হয়েছিল প্রবীণের। দেনায় জর্জরিত হয়েই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে তাঁদের কারও সঙ্গে ছ’বছর ধরে কোনও যোগাযোগ ছিল না প্রবীণ এবং তাঁর পরিবারের।