Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
GST

জিএসটি: কেন্দ্রকে আটকে দিল রাজ্য

বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী— বিজেপির সুশীল মোদীও  পরবর্তী বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসার প্রস্তাব দেন।

জিএসটি পরিষদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ছবি পিটিআই।

জিএসটি পরিষদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০৫:৪৮
Share: Save:

জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত সব রাজ্যের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ দশ বিরোধী-শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এককাট্টা হয়ে তা আটকে দিলেন।

আজ জিএসটি পরিষদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, কেরলের টমাস আইজ়্যাক, কংগ্রেস ও বিরোধী-শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত সংখ্যার জোরে সকলের উপর চাপিয়ে দিতে পারেন না। যাঁরা আপত্তি তুলছেন, তিনি তাঁদের অগ্রাহ্য করতে পারেন না। কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানাও শামিল হয়। এর পরে নির্মলাও পিছিয়ে আসেন। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী— বিজেপির সুশীল মোদীও পরবর্তী বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসার প্রস্তাব দেন। ১২ অক্টোবর ফের বৈঠক হবে।

জিএসটি পরিষদে বিজেপি-শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সংখ্যা বেশি। তা সত্ত্বেও অমিত মিত্রের নেতৃত্বে বিরোধী-শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা আজ ভোটাভুটি চেয়ে সরব হয়েছেন। সাধারণত ঐকমত্যের ভিত্তিতেই জিএসটি পরিষদে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু আজ জিএসটি পরিষদে সাত ঘণ্টার বৈঠকের পরেও এ নিয়ে ঐকমত্য হয়নি।

আরও পড়ুন: পঞ্জাবে রাহুলের সভাতেই কোন্দল​

কোভিড ও লকডাউনের জেরে জিএসটি থেকে রাজ্যগুলির আয় কমে গিয়েছে। সেই রাজস্ব ঘাটতি কেন্দ্রের জিএসটি সেস থেকে আয়ের মাধ্যমে মিটিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু সেস থেকে আয়ও কম হয়েছে বলে যুক্তি দিয়ে মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর পক্ষে জিএসটি ক্ষতিপূরণের টাকা মেটানো সম্ভব নয়। রাজ্যগুলি ধার করে নিক। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, কেরল থেকে শুরু করে কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলির দাবি ছিল, কেন্দ্র ধার করে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিক। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লিখেছিলেন।

আরও পড়ুন: যোগীর ইস্তফা চেয়ে সত্যাগ্রহ আগরতলায়

বৈঠকের পর দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ নির্মলা বলেন, ‘‘আমাকে ভদ্র ভাষায় মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমি কাউকে অগ্রাহ্য করতে পারি না। যদিও আমি তা করি না। আমি সব সময় আলোচনার জন্য তৈরি।’’ কিন্তু রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের অভিযোগ, নির্মলাই অর্থসচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডেকে এগিয়ে দিয়ে রাজ্যের আপত্তি অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করছিলেন। সাত ঘণ্টা পর আচমকাই অর্থসচিব বলেন, বৈঠক শেষ। এর পর আর্থিক বিষয়ক সচিব রাজ্যগুলির সঙ্গে ঋণ নিয়ে কথা বলে নেবেন। এতেই রে রে করে ওঠেন বিরোধীরা। অমিতবাবু বলেন, ‘‘অর্থসচিব কে এ কথা বলার! এই রকম অগণতান্ত্রিক ভাবে সিদ্ধান্ত হতে পারে না।’’ নির্মলাকে তিনি বলেন, ‘‘আপনি সচিবকে দিয়ে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন।’’ বৈঠকের পরে অমিতবাবু বলেন, ‘‘আমি জিএসটি পরিষদের গত ৪১টি বৈঠকে এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা দেখিনি।’’

আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কাকে হেনস্থার নিন্দা বিজেপিতেই

নির্মলা দু’টি প্রস্তাব রেখেছিলেন রাজ্যগুলির সামনে। এক, জিএসটি চালুর ফলে যে আয় কমেছে, রাজ্যগুলি সেই ৯৭ হাজার কোটি টাকা বাজার থেকে ধার করতে পারে। অথবা জিএসটি চালু ও কোভিডের জেরে যে ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা আয় কম হয়েছে, তার পুরোটাই ধার করতে পারে। বিজেপি ও এনডিএ-শাসিত ২১টি রাজ্য প্রথম বিকল্প বেছে নেয়।সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য তাঁর সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও তিনি যে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেননি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE