Advertisement
E-Paper

তিনটি নয়, ২৫০ সিলিন্ডার এনেছিলাম স্যর: কাফিল খানের ভিডিও ভাইরাল

অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করতে সবচেয়ে সক্রিয় হয়েছিলেন তিনিই। কিন্তু তিনিই এখন শাস্তির মুখে। হেনস্থার ভয়ে লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে পরিবার নিয়ে। নিজের কথা বলতে ফেসবুক ভিডিওর আশ্রয় নিলেন চিকিৎসক কাফিল খান। নিমেষে ভাইরাল হল ভিডিও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৭ ১৫:৪৫
সন্তানহারা মায়ের মতো চিকিৎসক কাফিল খানের মুখেও সে দিন যন্ত্রণার ছাপ ছিল স্পষ্ট। এখন অবশ্য নতুন যন্ত্রণায় পড়তে হয়েছে কাফিলকে। ছবি: এএফপি।

সন্তানহারা মায়ের মতো চিকিৎসক কাফিল খানের মুখেও সে দিন যন্ত্রণার ছাপ ছিল স্পষ্ট। এখন অবশ্য নতুন যন্ত্রণায় পড়তে হয়েছে কাফিলকে। ছবি: এএফপি।

নিজের বক্তব্য তুলে ধরার কোনও সুযোগই পাচ্ছেন না। তাই এ বার ফেসবুকের আশ্রয় নিলেন চিকিৎসক কাফিল খান। গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর পর শাস্তির মুখে পড়েছেন কাফিল। কিন্তু হাসপাতালে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার পর ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করা শুরু করেছিলেন যে চিকিৎসক, তাঁকেই কেন শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। এমন পরিস্থিতিতে ফেসবুক ভিডিওর মাধ্যমে নিজের বক্তব্য তুলে ধরলেন কাফিল খান। লুকিয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে তাঁর পরিবারকে, জানিয়েছেন কাফিল। ভাইরাল হয়ে গিয়েছে কাফিল খানের সেই ভিডিও-বয়ান।

গোরক্ষপুরের হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর প্রেক্ষিতে ৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন। শিশুমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিবও আলাদা রিপোর্ট তৈরি করেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টে চার জনকে বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে খবর। এই চার জনের মধ্যে তিন জন হলেন চিকিৎসক— কাফিল খান, রাজীব মিশ্র, পূর্ণিমা শুক্ল। অন্য জন হলেন বাবা রাঘব দাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা সংস্থা এম/এস পুষ্পা সেলসের মালিক।

কাফিল খানকে শিশুমৃত্যুর ঘটনার অন্যতম মূল অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার এই চেষ্টায় বিস্মিত অনেকেই। অক্সিজেনের অভাবে যখন নাভিশ্বাস উঠছিল হাসপাতালের, তখন কাফিলই ছোটাছুটি করে বাইরে থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাতে শিশুমৃত্যুর মিছিল পুরোপুরি রোখা যায়নি। কিন্তু কাফিল খান সক্রিয় না হলে বিপর্যয় আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নিতে পারত বলে অনেকেরই দাবি। শিশুমৃত্যুর পর গোরক্ষপুরের জেলাশাসক যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, তাতেও কাফিল খানকে দোষী ঠাওরানো হয়নি। কিন্তু লখনউ গোড়া থেকেই কাফিল খানকে নিশানা বানিয়ে ফেলেছে এবং মুখ্যসচিব যে রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়েছেন, তাতেও কাফিল খানকে অন্যতম মূল অভিযুক্ত হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে বলে খবর।

গোরক্ষপুর হাসপাতালের বিপর্যয় যথেষ্ট মুখ পুড়িয়েছে আদিত্যনাথ সরকারের। সেই গাফিলতি ধামাচাপা দিতেই এ বার কাফিল খানদের মতো কয়েক জনকে বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। —প্রতীকী ছবি।

এই রকম পরিস্থিতিতেই সামনে এসেছে কাফিলের ফেসবুক ভিডিও। সেখানে কাফিল খান বলেছেন, ‘‘আমি দেখলাম, ডিজিএমই (স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা) বলছেন যে হাসপাতালে ৫২টা সিলিন্ডার ছিল। তিনটে সিলিন্ডার এনে কাফিল কী এমন করেছে। স্যর, আমি তিনটে সিলিন্ডার আনিনি, ২৪ ঘণ্টায় আমি ২৫০টা সিলিন্ডার এনেছিলাম।’’ কাফিল খান ফেসবুক ভিডিওয় আরও বলেছেন, ‘‘সন্ধে ৬টা পর্যন্ত একটা লোকও ছিল না। আমরা সারা দিন-রাত ধরে ছোটাছুটি করেছি। কেউ (সাহায্য করতে) আসেননি। দুপুর থেকে জেলাশাসক বিষয়টা জানতেন। আমি সিএমও-কে (মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক) এবং এডি-কে (অতিরিক্ত অধিকর্তা, স্বাস্থ্য) ফোন করেছিলাম। আমি ভিক্ষা চেয়েছি, স্যর, আমাদের অন্তত ৫০টা সিলিন্ডার দিন। এখানে পরিস্থিতি খুব খারাপ, শিশুরা মারা যাচ্ছে। কেউ আসেননি। আর আপনি বলছেন তিনটে সিলিন্ডার!’’

আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রশ্নের মুখে গোমাংসে বিধিনিষেধও

কাফিল খানকে নিয়ে জনমানসে সহানুভূতি এমনিতেই ছিল। ফলে এই ফেসবুক ভিডিও সামনে আসতেই তা নিমেষে ভাইরাল হয়। ভিডিওয় কাফিল খান জানিয়েছেন, তাঁর গোটা পরিবার এখন লুকিয়ে জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। কাফিল খানের মা হজে গিয়েছেন। কী হবে পরিবারটার, সে কথা ভেবে তিনি সেখানেও উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন বলে কাফিল জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: বাবার রায়ে গলদ খুঁজে ইতিহাস গড়লেন ছেলে

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব যে দিন নিজের রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তার আগের দিন রাতেই কাফিল খান এই ফেসবুক ভিডিওটি ছেড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

Gorakhpur Kafeel Khan Facebook Video Viral Video Child Death কাফিল খান গোরক্ষপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy