প্রতীকী ছবি।
আগামী ১ মে থেকে দেশে শুরু হচ্ছে ১৮ বছরের উপরে টিকাকরণ প্রক্রিয়া। কিন্তু যখন বর্ষীয়ান ব্যক্তিরা দ্বিতীয় ডোজের প্রতিষেধক পাচ্ছেন না, নতুন নীতিতে বিশাল জনসংখ্যার জন্য প্রতিষেধকের জোগান দেওয়া কী ভাবে সম্ভব হবে সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে সব মহলে। যদিও আজ কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রতিষেধকের অভাব হবে না।
কেন্দ্রীয় সূত্রের মতে, কমবয়সিদের জন্য টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় মূলত রাশিয়ার প্রতিষেধক স্পুটনিক-ভি-এর উপরে ভরসা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, চলতি মাসের মধ্যে রাশিয়া থেকে প্রথম দফায় কয়েক কোটি প্রতিষেধক পৌঁছে যাবে ভারতে। নিয়ম মতো প্রথমে ১০০ জনকে ওই প্রতিষেধক দিয়ে সাত দিন ওই ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখা হবে। ফলাফল ইতিবাচক হলে বৃহত্তর জনসংখ্যার উপরে ওই প্রতিষেধক ব্যবহারের ছাড়পত্র দেবে কেন্দ্র। ভারতে ওই প্রতিষেধকের উৎপাদনের দায়িত্বে রয়েছে মূলত রেড্ডিজ ল্যাব। প্রাথমিক ভাবে ফি মাসে পাঁচ কোটি স্পুটনিক প্রতিষেধক এ দেশে উৎপাদন করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। দেশে যে গতিতে বর্তমানে টিকাকরণ হচ্ছে, তাতে ফি মাসে প্রায় ১০.৫ কোটি প্রতিষেধকের প্রয়োজন পড়ছে। এর মধ্যে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে প্রায় সাত কোটির কাছাকাছি প্রতিষেধক প্রতি মাসে উৎপাদিত হয়। স্পুটনিক এক বার ভারতে উৎপাদন শুরু করলে ফি মাসে প্রতিষেধকের ঘাটতি অনেকটাই মেটানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্যকর্তারা।
যে টিকাকরণ অভিযান চলছে, তার উপরে কোউইন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নজর রাখে কেন্দ্র। প্রবীণদের পাশাপাশি ১ মে থেকে ১৮-৪৪ বছরের ব্যক্তিদের টিকাকরণের ক্ষেত্রেও কো-উইন-এর মাধ্যমে নজরদারি চালাবে বলে আজ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে জানান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। দেশে তৃতীয় দফায় রাজ্যগুলিকে প্রতিষেধক উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি থেকে সরাসরি টিকা কেনার প্রশ্নে ছাড় দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ প্রসঙ্গে রাজেশ ভূষণ বলেন, ‘‘এত দিন প্রতিষেধক সংস্থাগুলি নিজেদের উৎপাদনের গোটাটাই কেন্দ্রকে দিত। এখন থেকে প্রতিষেধক সংস্থাগুলি ৫০% কেন্দ্রকে দেবে, বাকি ৫০% তারা বাজারের দামে রাজ্য ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বিক্রি করতে পারবে। তবে ১ মে-এর আগে তাদের তৈরি প্রতিষেধকের দাম কত হবে, তা প্রকাশ্যে জানাতে হবে প্রতিটি সংস্থাকে।’’ তবে আজ ভূষণ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলির প্রতিষেধক বিক্রি করার সুযোগ থাকলেও, পাড়ার ওষুধের দোকানে প্রতিষেধক পাওয়া যাবে না। হাসপাতাল বা টিকাকরণ শিবির থেকেই প্রতিষেধক নিতে হবে ইচ্ছুকদের। কোনও বেসরকারি হাসপাতাল যাতে প্রতিষেধক ঘিরে কালোবাজারি না করতে পারে, তার জন্য প্রতিষেধকের দামের উপর নজরদারি করা হবে, দাবি রাজেশ।
আগামী মাস থেকে কমবয়সিদের যে টিকাকরণ শুরু হবে সে ক্ষেত্রে প্রতিটি নতুন টিকাকরণ কেন্দ্রকে অতীতের মতোই জাতীয় টিকাকরণ নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। ইচ্ছুক ব্যক্তিরা আগে থেকেই কোউইন ওয়েবসাইটে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন অথবা টিকা নেওয়ার দিনে টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে ওই ওয়েবসাইটে নিজেদের তথ্য নথিভুক্ত করাতে পারবেন। একই ভাবে কোনও ব্যক্তির প্রতিষেধক নেওয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না সে বিষয়ে টিকাকরণ কেন্দ্রের কর্মীদের বিস্তারিত তথ্য ওই ওয়েবসাইটে আগের মতোই জানাতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy