ফাইল চিত্র।
বাংলায় গিয়ে অসমের নাগরিকপঞ্জির প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন অমিত শাহ। দলের সর্বভারতীয় সভাপতির সুরেই এ বার তৃণমূল নেত্রীকে বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
একটি বৈদ্যুতিন সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মমতা নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে যে ভাবে সুর চড়িয়েছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে তাঁরা দেশের মানুষের মন থেকে বিচ্ছিন্ন। ‘আত্মবিশ্বাসের অভাব’ থাকলে তবেই কেউ এ ভাবে ‘গৃহযুদ্ধ’ বা ‘রক্তস্নানে’র কথা বলেন বলে মোদীর অভিযোগ। তাঁর আক্রমণের কড়া জবাব দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্বও।
মোদী বলেছেন, ‘‘যাঁরা নিজেদের উপরে আস্থা হারিয়েছেন, জনপ্রিয়তা হারানোর ভয় আছে, প্রতিষ্ঠানের উপরেও আস্থা নেই— তাঁরাই ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘রক্তপাত’, ‘দেশ কে টুকড়ে টুকড়ে’ জাতীয় শব্দ ব্যবহার করেন। মমতাজি’র মনে থাকা উচিত, ২০০৫ সালে সংসদে তিনি কী বলেছিলেন। তখনকার মমতাজি সঠিক না আজকের মমতাজি?’’ রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, এনআরসি-প্রশ্নে বিরোধী শিবিরে ফাটল ধরানোর কৌশল নিয়েছেন মোদী। মমতাকেই প্রধান প্রতিপক্ষ করে বিজেপি চাইছে রাহুল গাঁধীকে অস্বস্তিতে ফেলতে।
আবার মোদী যখন প্রতিপক্ষকে বিঁধছেন, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ওম মাথুর তখন জয়পুরে বলেছেন, ‘‘দেশকে ধর্মশালা বানাতে দেওয়া হবে না! সারা দেশেই এনআরসি চালু হবে ২০১৯ সালের ভোটের পরে।’’ আর শাহ রবিবার মেরঠে দলের কর্মিসভায় ফের বলেছেন, শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে সব ব্যবস্থা হবে। কিন্তু বাংলাদেশি ‘অনুপ্রবেশকারী’দের জায়গা দেওয়া হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে ‘দম্ভের প্রকাশ’ বলেই অভিহিত করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যে দিলীপ ঘোষ বা কৈলাস বিজয়বর্গীয়েরা সর্বক্ষণ বলে চলেছেন, মেরে ফেলব, পুঁতে ফেলব। আত্মবিশ্বাস না থাকলে তবেই কেউ এই ভাষায় কথা বলে। আর ওঁদের সংগঠনের আত্মবিশ্বাস আছে তো? বাংলায় সংগঠনের কোনও শক্তি নেই বলেই বাইরে থেকে কাউকে না কাউকে উড়িয়ে এনে হাওয়া গরম করতে হয়!’’ তৃণমূল সূত্রের আরও বক্তব্য, মমতা অতীতে বলেছিলেন ভুয়ো পরিচয় দেখিয়ে বাংলায় ভোটার তালিকায় অনেকের নাম তোলা হয়েছে। কিন্তু এনআরসি থেকে বৈধ নাগরিকদের নাম বাদ দেওয়ার সঙ্গে সেই প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি ‘সস্তার রাজনীতি’ করছে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও এ দিন শাহদের পাল্টা আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘বাংলায় উড়ে এসে ওঁরা বলে যাচ্ছেন, এখানেও নাকি এনআরসি চালু করবেন! আমরা চ্যালেঞ্জ করছি, বিজেপির হাতে তো ১৯টা রাজ্যে সরকার আছে। সেখানে আগে এনআরসি চালু করে দেখান!’’
মোদী অবশ্য কটাক্ষ করেছেন বিরোধী ঐক্যকেও। তাঁর কথায়, ‘‘পরিবারতন্ত্রে ভর করে, নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে, ব্যক্তিগত উচ্চাশা মেটাতে আর শুধুই ক্ষমতার রাজনীতির জন্য বিরোধীদের জোট হয়েছে। একটাই প্রশ্ন, এ জোট ভোটের আগেই ভাঙবে না পরে?’’ যা শুনে কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতারা বলছেন, বিরোধীদের জোট নিয়ে মোদী চিন্তিত বলেই এ ভাবে আক্রমণ করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy