Advertisement
E-Paper

রেলের চিঠিতে পুজো-প্রস্তুতি থমকে মালিগাঁও কালীবাড়িতে

রথ হয়ে গিয়েছে। অন্য বছর এই সময় গুয়াহাটির মালিগাঁও কালীবাড়িতে চলে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। কী থিম হবে, কাদের আনা হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, কোন কোন প্রতিযোগিতা হবে, স্পনসর জোগাড় করার ভার কে নেবেন— তা নিয়ে সরগরম থাকে মন্দির কমিটির দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০৩:০৯
মালিগাঁও কালীবাড়ি। (ইনসেট) মন্দির কমিটির বৈঠক। - নিজস্ব চিত্র

মালিগাঁও কালীবাড়ি। (ইনসেট) মন্দির কমিটির বৈঠক। - নিজস্ব চিত্র

রথ হয়ে গিয়েছে। অন্য বছর এই সময় গুয়াহাটির মালিগাঁও কালীবাড়িতে চলে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। কী থিম হবে, কাদের আনা হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, কোন কোন প্রতিযোগিতা হবে, স্পনসর জোগাড় করার ভার কে নেবেন— তা নিয়ে সরগরম থাকে মন্দির কমিটির দফতর। কিন্তু এ বার গোটা চত্বরেই দমচাপা পরিবেশ। যে মন্দিরের পুজো গুয়াহাটির অন্যতম বড় আকর্ষণ, সেই মন্দির হঠাৎ করেই অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে। রেলের জমি জবরদখল করে মন্দির গড়া হয়েছে বলে চিঠি পাঠিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ভূমিকম্পে ভেঙে যাওয়া মন্দির পুনর্নিমাণের কাজও বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯৫১ সালে মালিগাঁও এলাকায় উত্তর-পূর্ব রেলের সদর দফতর থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে মালিগাঁও কালীবাড়ি তৈরি করা হয়েছিল। মন্দিরের উদ্বোধন করেছিলেন খোদ উত্তর-পূর্ব রেলের তদানীন্তন জেনারেল ম্যানেজার ডি সি বাইজাল। দীর্ঘ ৬৬ বছর ধরে গুয়াহাটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মস্থল এই কালীবাড়ি। বিশেষ করে কালীবাড়ির পুজোর জমক, ভক্তি, ভোগের টানে হাজার হাজার মানুষ মালিগাঁও আসেন। প্রতি বছর নতুন থিম থাকে কালীবাড়ির দুর্গাপুজোয়।

এ বছরের গোড়ায় হওয়া ভূমিকম্পে কালীবাড়ির বেশ কিছু অংশে ফাটল ধরে। পুরনো হয়ে যাওয়া চূড়া ও দেওয়ালের ফাটল দিয়ে গর্ভগৃহে পড়ছিল জল। মন্দির কমিটি তাই মন্দিরের মূল অংশের পুনর্নির্মাণ শুরু করে। সারানো হচ্ছিল দেওয়াল। ছাদ ঢালাই করে তৈরি করা হচ্ছিল নতুন চূড়া। তার মধ্যেই বিপত্তি। রেলের তরফে আচমকাই চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়— মূল মন্দিরের অংশটি রেলের জমি জবরদখল করে তৈরি। সেখানে কোনও নির্মাণ চলবে না। সব কাজ অবিলম্বে বন্ধ করে দিতে হবে।

মন্দির ম্যানেজিং কমিটির সম্পাদক অমিতাভ চৌধুরি বলেন, “যদিও রেল অনির্দিষ্টকালের জন্য আমাদের কাজ বন্ধ করে দিতে বলেছে। মন্দিরের যা অবস্থা, আমরা মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিতে পারব না। তাই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। রেলের তরফেই আমাদের বিদ্যুৎ ও জলের লাইন দেওয়া হয়েছে। জবরদখল করা সম্পত্তি হলে নিশ্চয়ই রেল তা দিত না। জানি না হঠাৎ কেন এমন চিঠি পাঠানো হচ্ছে। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, মন্দিরের মূল অংশ আদৌ তৈরি করা যাবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই। পুজো নিয়ে কোনও ভাবনা এই অবস্থায় সম্ভব নয়।”

রেলের মনোভাবের প্রতিবাদে এ দিন কালীবাড়ি চত্বরে জনসভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে হাজির স্থানীয় মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রেলের চিঠির প্রতিবাদে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের নবনিযুক্ত জেনারেল ম্যানেজার সহতে রামকে স্মারকলিপি পাঠানো হবে।

রেলের হয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার টি কে ভৌমিক। তাঁর যুক্তি— সিনিয়র সেকশনাল ইঞ্জিনিয়ারের দফতর থেকে পাওয়া হিসেব অনুযায়ী পশ্চিম মালিগাঁওয়ের ১ নম্বর প্লটে ১২.৬৫ মিটার লম্বা ও ১১ মিটার চওড়া জমিতে জবরদখল রয়েছে। মন্দির কমিটিকে তাই ওই জমি সংক্রান্ত দলিল, ল্যান্ড লাইসেন্স বা লিজের নথি জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা না করে কমিটি নির্মাণ চালাতে থাকে। ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ওয়ার্কস-২০০০’ অনুযায়ী রেলের জমিতে থাকা কোনও কাঠামোয় বদল আনা, পুনর্নির্মাণ রেলের উপযুক্ত অনুমতি ছাড়া করা চলে না। তেমন আগাম অনুমতিও কমিটি নেয়নি। তাই রেলের তরফে ওই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যেই সহতে রামের সঙ্গে বৈঠক করতে এসেছিলেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাই। কমিটির তরফে তাঁকে গোটা বিষয়টি জানানো
হয়। রাজেনবাবু বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপও জিএমের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন।

Maligaon Kalibari Puja Preparation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy