বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ এনে কলেজেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ছাত্রী। তাঁর শরীর ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন আরও এক ছাত্রী। তাঁর শরীরে পোড়া ক্ষত রয়েছে ৭০ শতাংশ। বালেশ্বরের কলেজের এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে ওড়িশা সরকার। দুই ছাত্রীর চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবে তারা। সেই সঙ্গে গঠন করা হয়েছে বিশেষ তদন্তদল। অভিযুক্ত অধ্যাপককে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাসপেন্ড করা হয়েছে ওই কলেজের প্রিন্সিপালকেও।
ওড়িশার শিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ রবিবার বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা কঠোর পদক্ষেপ করেছি। ওই কলেজের প্রিন্সিপালকে আমরা সাসপেন্ড করে দিয়েছি। অভিযুক্ত অধ্যাপককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এক বিশেষ দল গঠন করে আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।’’
আরও পড়ুন:
দগ্ধ ছাত্রীর কথা বলতে গিয়ে ওড়িশার মন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকার ওঁদের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেই অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি থাকে। এই ধরনের হেনস্থার ঘটনার তদন্ত সাধারণত তারাই করে থাকে। এ বার থেকে আমরাও সেই প্রক্রিয়ার দিকে নজর রাখব।’’
অভিযোগ, অধ্যাপকের যৌন হেনস্থার কথা অনেক দিন ধরেই জানিয়ে আসছিলেন ওই ছাত্রী। কিন্তু কেউ তাঁর কথায় কর্ণপাত করেননি। এমনকি তিনি গিয়েছিলেন বালেশ্বরের সাংসদ প্রতাপচন্দ্র সারেঙ্গির কাছেও। জানিয়েছিলেন, পদক্ষেপ না করা হলে তিনি আত্মঘাতী হবেন। কিন্তু তার পরেও কাজ হয়নি। সারেঙ্গি গোটা ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলেছেন। প্রিন্সিপাল অভিযুক্তকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন বলেও দাবি সাংসদের। সারেঙ্গি বলেছেন, ‘‘এই মেয়েটি কিছু দিন আগে আমার কাছে এসেছিলেন। অভিযোগ জানিয়েছিলেন। আমি তৎক্ষণাৎ কলেজের প্রিন্সিপালের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং এসপিকে বিষয়টি জানাই। প্রিন্সিপাল আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটি বিষয়টি দেখছে। পাঁচ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট আসবে। কিন্তু আমি যখন কলেজে গিয়ে তদন্ত কমিটির সঙ্গে দেখা করি, তদন্তে অনেক ফাঁক দেখতে পাই। ওরা অধ্যাপককে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন।’’ শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কঠোর পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন সাংসদও।