স্বামীর শেষকৃত্যে জ্ঞান হারালেন স্ত্রী, পহেলগাঁওয়ে নিহত ওড়িশার প্রশান্তের মুখাগ্নি করল ন’বছরের পুত্র, কাঁদল গোটা গ্রাম

গোটা গ্রামকে নাড়িয়ে দিয়েছে একটি দৃশ্য। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় স্বামীকে হারিয়ে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন স্ত্রী। বাবাকে হারিয়ে বাক্‌রুদ্ধ ন’বছরের ছেলেটিও। চোখে শূন্যতা। কাঁপা কাঁপা হাতে মুখাগ্নি করল সে। চিতার আগুনের দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইল। চোখ থেকে তখন অঝোরে জল গড়িয়ে পড়ছিল। এই দৃশ্য দেখে গ্রামবাসীদেরও চোখের জল বাধ মানেনি। তাঁরাও চোখের জলে বিদায় জানালেন প্রশান্ত শতপতিকে।

ওড়িশার বালেশ্বরের ইশানী গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত। স্ত্রী প্রিয়দর্শিনী এবং পুত্র তনুজ। বছর একচল্লিশের প্রশান্ত কাজ করতেন সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোকেমিক্যালস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে। স্ত্রী এবং পুত্রকে নিয়ে ছুটি কাটাতে পহেলগাঁও গিয়েছিলেন। কিন্তু জঙ্গিরা তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। প্রশান্তের মৃত্যুর খবর পৌঁছোতেই বিষণ্ণতা নেমে আসে তাঁর গ্রামে।

বুধবার কাশ্মীর থেকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয় প্রশান্তের দেহ। তাঁর দেহ পৌঁছোতেই গ্রামবাসীরা ভিড় করেন। প্রশান্তের বাড়িতে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি, পরিবহণ মন্ত্রী বিভূতিভূষণ জেনা এবং বালেশ্বরের সাংসদ প্রতাপচন্দ্র সারেঙ্গি। তাঁরা সকলেই প্রশান্তের শেষকৃত্যে যান। বয়োজ্যেষ্ঠরা যা বলছিলেন, ছোট্ট ছেলেটি সেগুলিই অনুসরণ করছিল। তার পর মুখাগ্নিও করে সে। বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল সে। মুখাগ্নি সেরেই কান্নায় ভেঙে পড়ে। গত মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় হত্যালীলা চালায় জঙ্গিরা। সেই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ২৬ পর্যটকের।