‘ছম্মক ছল্লো’ গানের দৃশ্যে শাহরুখ ও করিনা।
ফ্ল্যাটের ডাস্টবিন উল্টে দেওয়ায় পড়শি মহিলাকে রেগে গিয়ে ‘ছম্মক ছল্লো’ বলেছিলেন ঠাণের এক ব্যক্তি। প্রথমে হাউসিং সোসাইটি এবং পরে পুলিশের কাছে ওই ব্যক্তির নামে অভিযোগ করেন ওই মহিলা। বিশেষ সুবিধা না হওয়ায় শেষে আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেন। এরই জেরে ওই ব্যক্তিকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় (শব্দ, অঙ্গভঙ্গিমার দ্বারা নারীর শালীনতায় আক্রমণ) দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এক টাকা জরিমানা-সহ এক দিনের জেল হেফাজতের আদেশ দেন বিচারক। ‘ছম্মক ছল্লো’ শব্দটি যথেষ্ট অপমানজনক এবং তা নারীর মর্যাদায় আঘাত হানছে বলে জানান বিচারক আর টি ইনগলে।
আরও পড়ুন: খুনি কে, একমত নন ভাইবোনই
ঘটনাটি ঠিক কী?
অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী দু’জনে একই আবাসনের বাসিন্দা। মহারাষ্ট্রের ঠাণের ঘোডবান্ডার রোডে তাঁদের আবাসন। ফ্ল্যাটের চার তলায় থাকেন অভিযুক্ত আর অভিযোগকারী মহিলা থাকেন পাঁচ তলায়। ২০০৯ সালের ৯ জানুয়ারি সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ স্বামীর সঙ্গে মর্নিং ওয়াক সেরে ফিরছিলেন অভিযোগকারী মহিলা। সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে হঠা়ৎই অভিযুক্তের ডাস্টবিনে পা ঠেকে যায় ওই মহিলার। ডাস্টবিন পড়ে গিয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে নোংরা। যা দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন অভিযুক্ত। শুরু হয় বচসা। সেই সময়েই মহিলাকে তিনি ‘ছম্মক ছল্লো’ বলেন।
বিচারক কী বলছেন?
বিচারক আর টি ইনগলে বলছেন, “ছম্মক ছল্লো শব্দটি একটি হিন্দি শব্দ। এই ধরনের কোনও শব্দ ইংরেজিতে নেই। সাধারণত, এই ধরনের শব্দ মহিলাদের অপমান করার জন্যই ব্যবহৃত হয়। কোনও মহিলাকে সম্মান জানাতে বা তাঁর প্রশংসা করতে নিশ্চয় এই শব্দ ব্যবহার করা হয় না। এই ধরনের শব্দের ব্যবহার সত্যিই কোনও মহিলার বিরক্তি এবং রাগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
আরও পড়ুন: মুম্বই হামলায় যাবজ্জীবন আবু সালেমের
যদিও ‘ছম্মক ছল্লো’ শব্দটি লোকের মুখে মুখে ঘুরতে থাকে ২০১১ সালের পর থেকে। শাহরুখ খান অভিনীত ‘রা-ওয়ান’ ছবিতে আমেরিকার পপ গায়ক অ্যাকনের গলায় ‘ছম্মক ছল্লো’ গানটি ব্যাপক হিট হওয়ার পর থেকে। ছবিতে গানটি লিখেছিলেন বিশাল দাদলানি এবং নিরঞ্জন আইঙ্গার। গানটির সুর দিয়েছিলেন বিশাল ও শেখর। তবে গানে ব্যবহৃত এই শব্দটি নিয়ে এক্কেবারেই আপত্তি নেই এই গানের সুরকার এবং গীতিকার বিশাল দাদলানির। তাঁর মতে, “রা-ওয়ানে আমাদের গানে একজন স্বামী তাঁর স্ত্রীকে ছম্মক ছল্লো বলে ডাকছেন। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে এইটুকু ঠাট্টা করার অধিকারও কি আমাদের নেই?”
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁকে সর্বোচ্চ এক বছরের জেল, জরিমানা আবার কখনও বা দুটোই এক সঙ্গে দেওয়া হয়। অভিযোগকারী এবং তাঁর স্বামীর কাছে অভিযুক্ত লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় আদালত ওই ব্যক্তিকে ন্যূনতম শাস্তি দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy