প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। -ফাইল ছবি।
লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটকে কংগ্রেস, জেডিএস জোট সরকার ফেলে দিতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। যে ভাবে হোক দল ভাঙানোর চেষ্টা হচ্ছে। একমাত্র ঈশ্বরই বাঁচাতে পারেন জোট সরকারকে।
একটি সর্বভারতীয় ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বললেন জেডিএস নেতা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলের (মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী) সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য ওরা (বিজেপি) উঠেপড়ে লেগেছে। শুধু ঈশ্বরই বাঁচাতে পারেন।’’
লোকসভা ভোটের আগে কয়েক দিন ধরেই কর্নাটকে নাটক জমে উঠেছে। কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী ডি কে শিবকুমার মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, দলের তিন বিধায়ককে মু্ম্বইয়ের একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন বিজেপি নেতারা। ওই তিন বিধায়ক এখনও রয়েছেন মুম্বইয়ের হোটেলে। শুধু ওই তিন জনই নয়, কংগ্রেসের আরও অভিযোগ, দলের ১০ জন এবং জেডিএসের ১৩ জন বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিজেপি। সরকার ফেলতে অন্তত ৮/৯ জনকে পদত্যাগ করাতে চাইছে নরেন্দ্র মোদীর দল। এরই মধ্যে, কংগ্রেস, জেডিএস জোট সরকারের সঙ্গে থাকা দুই নির্দল বিধায়ক এইচ নাগেশ এবং আর শঙ্কর মঙ্গলবার সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন। কর্নাটকের বিধানসভায় ২২৪টি আসনের মধ্যে বিজেপির হাতে রয়েছে ১০৪টি। দুই নির্দল বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করায় সরকারপক্ষের বিধাযক-সংখ্যা কমে হল ১১৬।
ও দিকে, কর্নাটকের বিজেপি বিধায়কেরা পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীই বিজেপির বিধায়কদের ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। রাজ্যের বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা সোমবার দিল্লিতে বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছেন, কুমারস্বামীর ওই পরিকল্পনা রুখতে কর্নাটকের ১০৪ জন বিজেপি বিধায়ক কিছু দিন দিল্লিতেই থাকবেন। তাঁদের রাখা হয়েছে গুরুগ্রামের একটি রিসর্টে।
আরও পড়ুন- কর্নাটকে ফের রাজনৈতিক টানাপড়েন! জল্পনার মধ্যেই মুম্বইয়ের হোটেলে তিন কংগ্রেস বিধায়ক
আরও পড়ুন- মধ্যবিত্তের মন পেতে কি এ বার আয়করে ছাড়? জোর জল্পনা অন্তর্বর্তী বাজেটে
বেঙ্গালুরুর রাজনৈতিক মহলের খবর, লোকসভা ভোটের আসন বণ্টনের আলোচনায় কংগ্রেস এবং জেডিএসের মধ্যে দূরত্বটা বেড়ে যাওয়ায় বিজেপি তার সুযোগ নিতে চাইছে। নরেন্দ্র মোদীর দলের লক্ষ্য, যে ভাবেই হোক, কংগ্রেস, জেডিএসের বিধায়কদের একাংশকে ভাঙিয়ে নেওয়া। সেই সংখ্যাটা ১২/১৩ হলে তো কথাই নেই! বিজেপি সরকার গড়ে ফেলতে পারবে। সংখ্যাটা তার চেয়ে কম হলেও বিধানসভায় হৃতবল হয়ে পড়বে শাসক কংগ্রেস, জেডিএস জোট। তখন অন্তর্বর্তী বিধানসভা ভোটের দাবি জানাতে পারবে বিজেপি।
এমন একটা সময়ে এই দল ভাঙানোর খেলা শুরু হয়েছে, যখন লোকসভা ভোটের জন্য কংগ্রেস এবং জেডিএসের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে দর কষাকষি চলছে। কর্নাটক বিধানসভায় জেডিএসের আসন সংখ্যা কম হওয়া সত্ত্বেও রাহুল গাঁধী জেডিএসের এইচ ডি কুমারস্বামীকেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কুমারস্বামী গত সাত মাসে একাধিক বার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার কুমারস্বামী ফের মন্তব্য করেন, ‘‘কংগ্রেস যেন আমাদের তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে না করে।’’
কর্নাটকের ২৮টি লোকসভা আসনের মধ্যে জেডিএস এত দিন ১২টি দাবি করছিল। কুমারস্বামীর বাবা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া জানিয়েছেন, তিন ভাগের এক ভাগ আসনে জেডিএস লড়তে চায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy