Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উত্তরাখণ্ড নিয়ে সংসদে ফের তৃণমূল-বিজেপি আঁতাঁতের প্রশ্ন

উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে কংগ্রেস-বামেরা যখন সংসদে উত্তাল, সেই সময় নীরব থাকল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘুরেফিরে তৃণমূল-বিজেপির আঁতাঁতের প্রসঙ্গটিই ফের উঠল সংসদের প্রথম দিনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ১৭:১২
Share: Save:

উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে কংগ্রেস-বামেরা যখন সংসদে উত্তাল, সেই সময় নীরব থাকল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘুরেফিরে তৃণমূল-বিজেপির আঁতাঁতের প্রসঙ্গটিই ফের উঠল সংসদের প্রথম দিনে।

আজ সংসদের প্রথম দিনেই উত্তরাখণ্ডের রাষ্ট্রপতি শাসন জারির বিষয়টি নিয়ে তেড়েফুঁড়ে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। লোকসভায় বিরোধীরা সংখ্যালঘু। তা-ও প্রথমে দাঁড়িয়ে, পরে ক্লান্ত হয়ে মাটিতে বসেও মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে গোটা কংগ্রেস শিবির প্রতিবাদ করে গিয়েছে। রাজ্যসভায় সরকারকে চেপে ধরতে একযোগে সরব ছিলেন গুলাম নবি আজাদ ও সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিরা। ভোটে ব্যস্ত থাকায় তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা ছিলেন না বটে, কিন্তু দলের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না, এমন নয়। অন্তত রাজ্যসভায় সুখেন্দুশেখর রায় উপস্থিত ছিলেন। তা সত্ত্বেও আগাগোড়া নীরবই রইল তৃণমূল।

অথচ বছরখানেক আগেও এই তৃণমূলকে প্রায় নিয়মিত সংসদ চত্বরে নানান আঙ্গিকে ধর্না দিতে দেখা গিয়েছে। আর এখন সংসদ যখন উত্তরাখণ্ড নিয়ে তোলপাড়, দফায় দফায় মুলতুবি হচ্ছে, সেই সময় চুপ করে রইল পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল। তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোট বাজারে এখন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আর কোনও অবস্থানই নিতে চাইছে না তৃণমূল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে আঁতাতেরই ফল এটা? ক’দিন আগেই দিল্লিতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পুরনো সাক্ষাৎকারের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে দেখানো হয় এই আঁতাঁতের ছবিটি। যেখানে মমতা অকপটে বলছেন, বিজেপি তাঁদের সহজাত বন্ধু।

আজকের ভোটপর্ব সাঙ্গ হওয়ার পরেও বাকি রয়েছে আরও দু’দফার নির্বাচন। কংগ্রেস ও সিপিএমের নেতারা বার বার বলে আসছেন, আসলে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে আঁতাঁত রয়েছে। আর এই আঁতাঁতের অঙ্গ হিসেবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে ভোটপ্রচারে গিয়ে দিদির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। যাতে মমতার সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে কোনও ধন্ধ তৈরি না হয়। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের মতে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূল যৌথ কৌশল মেনেই এক জন অন্য জনকে আক্রমণ করছে। সীতারাম ইয়েচুরির মতে, পশ্চিমবঙ্গে দুই দলের ম্যাচ গড়াপেটা তো আর নতুন কিছু নয়। আজ গোটা বিরোধী শিবির যখন উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে সরকারকে ঘিরে ধরছে, সেই সময় সরকার বলছে বিচারাধীন ইস্যু সংসদে আলোচনা হবে না। অথচ অরুণ জেটলি সাম্প্রতিক অতীতেই বিচারাধীন ইস্যু নিয়ে সংসদে আলোচনা করেছেন।

বিরোধীদের আক্রমণের মুখে লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার উত্তরাখণ্ডে কোনও সঙ্কট তৈরি করেনি। এটি কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সঙ্কটের কারণে তৈরি হয়েছে। কিন্তু সে কথা শুনে রে-রে করে ওঠেন সনিয়া গাঁধী। প্রশ্ন হল, কংগ্রেস ও বাম যখন এতটাই আক্রমণাত্মক হচ্ছে, সেই সময় তৃণমূল একেবারে চুপ কেন? এই প্রশ্নটি ভাবাচ্ছে তৃণমূলের কিছু সাংসদকেও। দলের এক সাংসদের বক্তব্য, ‘‘উত্তরাখণ্ড নিয়ে একেবারে কোনও অবস্থান না নিয়ে নীরব থাকাটা আদৌ ঠিক কৌশল নয়। ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় সরকার যদি কোনও বাহানায় পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে, তা হলে কি সেটি মেনে নেওয়া হবে? এখন ভোটের মরসুম। কিন্তু ভোট শেষ হলে দলের নেতৃত্বকেও এই নিয়ে কোনও একটি অবস্থান নিতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajya Sabha Uttarakhand TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE