মহাকুম্ভের ত্রিবেণী সঙ্গমে মৌনী অমাবস্যায় পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের একের পর এক দেহ ফেরত যাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের অভিযোগ, উপযুক্ত ময়নাতদন্ত না করেই দেহ ফেরত পাঠানো হচ্ছে, যাতে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দায় উত্তরপ্রদেশ সরকার ঝেড়ে ফেলতে পারে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বা অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দিতে পারে। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা এতই বেড়ে চলেছে যে, তাকে আড়াল করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। যে সংখ্যাটি দেখানো হচ্ছে, প্রকৃত মৃত্যর ঘটনা তার প্রায় দশগুণ বলেই জানাচ্ছে একটি সরকারি সূত্র। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কুম্ভ থেকে আসা দেহের ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই জানাচ্ছে শীর্ষ তৃণমূল সূত্র।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার সকালে রাজ্যসভা অধিবেশনের সমস্ত কাজ মুলতুবি রেখে কুম্ভের দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে সব প্রধান বিরোধী দল। বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়া জোটের দলগুলির মধ্যে ইতিবাচক সমন্বয় হয়েছে। তৃণমূল, এসপি, উদ্ধবপন্থী শিবসেনা, শরদপন্থী এনসিপি এবং কংগ্রেস — প্রতিটি দল এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যসভার ২৬৭ নম্বর ধারায় আজই নোটিস জমা করেছে। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সভার চেয়ারম্যান এই প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না। সে ক্ষেত্রে বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করবে সবক’টি বিরোধী দল।
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েনের বক্তব্য, "আমরা বলব, এই নোটিস গ্রহণ করে আমাদের আলোচনা করতে দিতে হবে। কারণ এর আগে জুলাই মাসে দিল্লিতে তিন জন ছাত্রের মৃত্যুর পরে বিজেপির সাংসদেরা যখন এই একই নোটিস দিয়েছিলেন, তখন তা গ্রহণ করে বিষয়টি নিয়ে স্বল্পমেয়াদি আলোচনার অনুমতি দিয়েছিলেন চেয়ারম্যান। শাসকদল চাইলে পাবে আর বিরোধীরা পাবে না, এ কেমন কথা!"
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশও আজ বলেছেন, "বিজেপি সরকার ওই দুর্ঘটনায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা চেপে যাচ্ছে। পাঁচ দিন হয়ে গেল। এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, সরকারই আসলে দোষী এবং তারা নিজেদের কৃতকর্ম থেকে পালিয়ে যেতে চাইছে। এর থেকেই স্পষ্ট, নিজেদের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি বজায় রাখা ছাড়া সরকারের আর কোনও উদ্দেশ্য নেই। যখন কৃতিত্ব নেওয়ার থাকে, সমস্ত বিজেপি সদস্য এগিয়ে আসেন মোদী-যোগীকে তুলে ধরতে। কিন্তু যখন দায় নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে, সবাই পালায়!"
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)