বেকারত্ব, কর্মসংস্থান, কৃষকদের দুরবস্থা, দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে মোদী সরকারকে ধারাবাহিক ভাবে নিশানা করছেন বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে জাতীয় সমবায় নীতি (২০২৫) প্রকাশ অনুষ্ঠানে তার জবাব দিতে চাইলেন দেশের স্বরাষ্ট্র তথা সমবায়মন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, নতুন নীতি দেশের আর্থিক বৃদ্ধি এবং আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের পরিস্থিতি উন্নয়নে সহায়ক হবে। কর্মসংস্থানের প্রশ্নে কেন্দ্র যে সমবায় আন্দোলনকেও অন্যতম হাতিয়ার করতে চায়, তা-ও স্পষ্ট করেছেন শাহ।
দেশে ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসংস্থান হয়নি, বেড়েছে বেকারত্ব, আর্থিক বৃদ্ধিও যথাযথ নয়, কৃষকদের দুরবস্থা ক্রমে বাড়ছে— কংগ্রেস থেকে তৃণমূল, এ নিয়ে নিয়মিত কাঠগড়ায় তুলছে মোদী সরকারকে। অনুষ্ঠানে শাহের ঘোষণা, নতুন সমবায় নীতিতে বিশেষ জোর থাকবে কৃষক, মহিলা, যুব, দলিত ও আদিবাসী মানুষের ক্ষেত্রে। নতুন নীতির ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ গড় উৎপাদনে (জিডিপি) সমবায় ক্ষেত্রের অবদান তিন গুণ বৃদ্ধির চেষ্টা হবে। শাহ বলেন, “যাঁরা এখনও পিছিয়ে, তাঁদের এগিয়ে দেওয়া, যুবরা যাতে সমবায়কেও আয়ের মাধ্যম হিসেবে ধরতে সাহস পায়, তা নিশ্চিত করা লক্ষ্য। তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে এর প্রভাব থাকবে।”
দেশের নানা প্রান্তে ক্ষোভ বাড়ছে কৃষকদের। এ দিন শাহের দাবি, কৃষি ক্ষেত্রে সমবায়গুলির গুরুত্ব আরও বাড়াতে নয়া নীতির মাধ্যমে পদক্ষেপ করা যাবে। প্রযুক্তিগত ভাবে এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রাইমারি এগ্রিকালচার ক্রেডিট সোসাইটিগুলিকে (প্যাক্স)। সেগুলির সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়বে কাজের পরিধিও। যাতে বেশি মানুষ যুক্ত হতে পারেন। নয়া নীতির লক্ষ্য, সব গ্রামে একটি করে সমবায় থাকবে। তার সংখ্যা ও সদস্য বৃদ্ধি হবে। ৫০ কোটি সক্রিয় সদস্য তৈরির চেষ্টা হবে। সমবায়ের সংখ্যা এখন ৮.৩০ লক্ষ। তার ৩০% বৃদ্ধি হবে। তৈরি হবে মডেল সমবায় গ্রাম। সব পঞ্চায়েতে হবে প্যাক্স। শাহের কথায়, “সব রাজ্য এবং সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে নীতি তৈরির আগে। এই নীতি সব রাজ্য প্রয়োগ করলে ভাল ফল মিলবে।”
২০২১ সালে সমবায় মন্ত্রক প্রথম তৈরি করে মোদী সরকার। শাহ দায়িত্ব পান। বিরোধীদের দাবি, সমবায়গুলির নিয়ন্ত্রণ নিতে এই পদক্ষেপ। পাল্টা শাহের দাবি, “২০০২-এ অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকার প্রথম সমবায় নীতি তৈরি করেছিল। এত বছর বাদে ফের তা হল। ২০৪৭ সালে বিকশিত ভারতের লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)