পহেলগামের সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধী শিবির সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি তুলতে চলেছে। কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বিরোধী শিবিরের অন্য দলগুলির মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং বর্তমানে নির্দল সাংসদ কপিল সিব্বলের তরফেই প্রথম এই ভাবনার কথা বাকি বিরোধী দলগুলিকে জানানো হয়েছে। এখন কংগ্রেস নেতৃত্ব বাকি দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করছে। দু’-তিন দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে দাবি তোলা হবে।
পহেলগামের হামলার পরে মোদী সরকার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। বিরোধীদের দাবি, সেই বৈঠক মূলত সংসদীয় দলনেতাদের বৈঠক ছিল। তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএমকে-র এম কে স্ট্যালিনের মতো আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতারা সেখানে হাজির ছিলেন না। সংসদের বিশেষ অধিবেশনের পাশাপাশি ফের সর্বদলীয় বৈঠক ডাকারও দাবি তোলা হতে পারে। যাতে সেখানে আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতারা হাজির থাকেন।
বিরোধী শিবির সূত্রের বক্তব্য, সর্বদলীয় বৈঠক হলেও খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেখানে হাজির ছিলেন না। হামলার জবাবে প্রত্যাঘাতের প্রশ্নে বিরোধীরা সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা নিয়ে মোদী সরকারের দায়বদ্ধতা নির্ধারণ করাও জরুরি। মোদী প্রকাশ্যেই আসছেন না। কংগ্রেসের নেতারা আজ মোদীর আড়ালে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের মতে, সংসদে আলোচনা হলে গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে। সর্বদলীয় বৈঠকেও রাহুল গান্ধীরা গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। যদিও বৈঠকের বাইরে সকলেই সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার প্রশ্নে সরকারের পাশে থাকার বার্তা দেন।
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, তৃণমূল ও নির্দল সাংসদই প্রথম সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি তোলার ভাবনা সামনে রেখেছেন। এ বিষয়ে মে মাসের গোড়াতেই বিরোধীরা পদক্ষেপ করবেন। সূত্রের খবর, গত দু’দিন ধরে এ নিয়ে আলোচনা চলছে বিরোধীদের মধ্যে। সিব্বল বলেন, “আমি ২৫ এপ্রিল প্রস্তাব দিয়েছিলাম, সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে দেশের ঐক্য দেখানো হোক। আমি সব দলকে অনুরোধ করছি যাতে তারা সরকারকে বলেন, মে মাসেই এই অধিবেশন ডাকার জন্য।” সূত্রের খবর, সর্বদলীয় বৈঠকে আইইউএমএল সাংসদ হ্যারিস বীরানও বিশেষ অধিবেশন ডাকার কথা বলেছিলেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)