ভারতের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন কি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল ইসলামাবাদের? সংঘর্ষবিরতির ৬৩ দিন পরে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। দাবি করলেন, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র শান্তির জন্য, দেশের রক্ষার জন্য। আগ্রাসনের জন্য নয়।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। তার পর গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে সেনা অভিযান চালায় ভারত। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের হামলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। তার পর টানা চার দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সশস্ত্র সংঘাত চলেছে। ১০ মে সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত এবং পাকিস্তান। দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর হওয়ায় এই সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত-পাক সংঘাত পরমাণু শক্তি প্রয়োগের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে বার বার এই দাবি করেছেন। পাক প্রধানমন্ত্রী সেই সম্ভাবনা কার্যত উড়িয়েই দিলেন।
আরও পড়ুন:
শনিবার ইসলামাবাদের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন শাহবাজ়। সেখানে এক দল পড়ুয়ার সামনে ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। পাক প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতের সেনা অভিযানে পাকিস্তানের ৫৫ জন নিহত হয়েছেন। তবে পাল্টা তার জবাবও ইসলামাবাদ দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এর পরে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল শাহবাজ়কে। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি একান্ত ভাবেই শান্তির জন্য। দেশের প্রতিরক্ষার স্বার্থে। আগ্রাসনের জন্য নয়।’’
‘সিঁদুর’ অভিযান এবং তৎপরবর্তী সংঘাতের পর ভারতের বিরুদ্ধে লাগাতার আগ্রাসনের অভিযোগ তুলে এসেছে পাকিস্তান। সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে তারা। তবে ভারতের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট। সীমান্ত সংঘর্ষ না থামালে সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরবে না নয়াদিল্লি। ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতির কথা প্রথম প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, তাঁর হস্তক্ষেপেই পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ সংঘর্ষ থামিয়েছে। ভারত এবং পাকিস্তানের সংঘাত পরমাণু অস্ত্র পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল বলে দাবি ট্রাম্পের। তবে ভারত বা পাকিস্তানের তরফে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।