Advertisement
E-Paper

মোদী নন, লালুর নিশানায় নীতীশই

সাপ-চন্দন বিতর্কের সেই সাপের খোঁজ নিয়ে সরগরম বিহারের রাজনীতি। এরই মাঝে আসরে নামলেন লালুপ্রসাদ। নীতীশের টুইট নিয়ে বিরক্ত আরজেডি প্রধান। তাঁর সাফ কথা, ‘‘এ নিয়ে যা বলার তা বলবেন নীতীশ। আমার আর কী বলার আছে!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:৫২
যে ভঙ্গি নিয়ে কটাক্ষ লালুর। পটনায় মোদী, নীতীশের হোর্ডিং। ছবি: শ্যামলী দে।

যে ভঙ্গি নিয়ে কটাক্ষ লালুর। পটনায় মোদী, নীতীশের হোর্ডিং। ছবি: শ্যামলী দে।

সাপ-চন্দন বিতর্কের সেই সাপের খোঁজ নিয়ে সরগরম বিহারের রাজনীতি। এরই মাঝে আসরে নামলেন লালুপ্রসাদ। নীতীশের টুইট নিয়ে বিরক্ত আরজেডি প্রধান। তাঁর সাফ কথা, ‘‘এ নিয়ে যা বলার তা বলবেন নীতীশ। আমার আর কী বলার আছে!’’ তবে মুখে এ কথা বললেও নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে নীতীশের দিকেই পরোক্ষে আক্রমণের তির ছুড়েছেন লালু প্রসাদ। তাঁর কথায়, ‘‘আঙুল তোলা মোদীজির যে ছবি সারা শহর জুড়ে টাঙানো হচ্ছে তাতে তাঁর ভঙ্গি দেখেই বোঝা যায় তিনি তানাশাহ্— স্বৈরতান্ত্রিক।’’ উল্লেখ্য, মোদীর আঙুল তোলা ছবির সঙ্গে পাল্লা দিয়েই শহর জুড়ে পড়ছে নীতীশের ছবিও। রাজ্য-রাজনীতির বিভিন্ন ব্যক্তির মতে, আসলে নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে নীতীশকেই নিশানা করেছেন লালু।

দিন দুয়েক আগে টুইটারে লালুর সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে নীতীশ আশ্রয় নিয়েছিলেন রহিম দাসের দোঁহা-র। পরে যদিও ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন লালুকে নয়, বিজেপির উদ্দেশেই তিনি ওই টুইট করেছেন। তাতে বিতর্ক থামেনি। উল্টে লালুপ্রসাদের অনুগামীরা নীতীশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সেই টুইটারেই। এ দিন বাড়িতে বসেই টুইটার নিয়ে আলোচনা করছিলেন লালুপ্রসাদ। সেখানেই তিনি নরেন্দ্র মোদীর হোর্ডিং প্রসঙ্গ টেনে আনেন। ঘনিষ্ঠ মহলে লালু জানিয়েছেন, যৌথ নেতৃত্বে আস্থা না রাখলে বিহারে বিজেপিকে হারানো সম্ভব হবে না। আর নীতীশ কুমার যৌথ নেতৃত্বে যেতে রাজি নন। এমনকী জোট ঘোষণা হওয়ার প্রায় মাস খানেক পার হয়ে গেলেও যৌথ সভা করতে রাজি হচ্ছেন না নীতীশ। শহর জুড়ে যে পোস্টার-হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে তাতে শুধুমাত্র নীতীশের ছবি। পাশাপাশি, বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে লালুকে আক্রমণ করছেন নীতীশ-অনুগামীরা। উন্নয়ন বিরোধী তকমা লাগানো হচ্ছে লালুর গায়েই। লালু ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, জোট ঘোষণার আগেই নিজেকে নেতা হিসেবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন নীতীশ। জোটের প্রচারে কোথাও লালুপ্রসাদের ছবি নেই।

এ দিনও তাঁর দোঁহা টুইট নিয়ে সাফাই দিয়েছেন নীতীশ। সংবাদমাধ্যমের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘লালুজি বলেছিলেন বিষ হজম করে তিনি জোট করছেন। তার মানে কী আমাকে বলেছিলেন। না, তিনি বিজেপিকে বলেছিলেন। সেটাই আপনারা বুঝতে পারেননি। আমিও বিজেপিকেই বলেছি।’’ এ দিকে লালু-নীতীশের লড়াইয়ে ফের মাঠে নেমেছে বিজেপি। দলের সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদবও পাল্টা দোঁহার জন্য সেই রহিম দাসের উপরেই নির্ভর করেছেন, ‘‘রহিমন ধাগা প্রেম কা, মত তোড়ো চটকায়। টুটে পে ফির না জুটে, জুটে পে গাঠ পড় যাই।’’ অর্থাত্ প্রেমের ধাগা ছিড়ে গেলে জোড়া লাগে না, লাগলেও গিঁট পড়বেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নীতীশ কুমার সকলের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। জর্জ ফার্নান্ডেজ থেকে জিতনরাম মাঁঝি, সকলের সঙ্গে। লালুজিরও অ্যালার্ট থাকা উচিত।’’

লোকসভা ভোটে রাজ্যে ভরাডুবির পর রাজ্য-রাজনীতিতে মেরুপ্রমাণ দূরত্বে থাকা নীতীশ কুমার ও লালুপ্রসাদ বিজেপি-র বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন। কিন্তু তাতে এই দুই নেতার চিরন্তন লড়াই থেমে নেই। আপাতত একে অপরকে মেনে নিয়েছেন নিতান্তই নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। একদা এই দু’জনের ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপি ক্ষমতায় এলে ওঁদের দু’জনেরই দলীয় সাইনবোর্ড ছাড়া আর কিছু যে থাকবে না, সেটা বুঝেই এই জোট। আর এই বাধ্যবাধকতার জোটে এই মতবিরোধ তো মাথাচাড়া দেবেই। আসন ভাগাভাগির পর, ভোট পর্যন্ত এই জোট থাকবে কিনা সন্দেহ আছে।’’

Paswan Nitish Kumar Lalu Prasad tweet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy