শেষপর্যন্ত কংগ্রেসের হাত থেকে ফস্কেই গেল অরুণাচল। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যে সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার দু’মাসের মাথায়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু আজ সকালে নাটকীয় ভাবে কংগ্রেসের ৪২ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপির শরিক দল ‘পিপল্স পার্টি অফ অরুণাচল’-এ যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেসে থেকে গিয়েছেন মাত্র এক জন বিধায়ক। তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকি। এই মুহূর্তে অরুণাচল বিধানসভায় তিনিই রইলেন বিরোধী দলের এক মাত্র প্রতিনিধি।
ফলে পরিস্থিতি এমন দাঁড়াল যে কংগ্রেসের পক্ষে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও কোনও উপায় রইল না। এত বড় আকস্মিক পালাবদল ঘুণাক্ষরেও টের পাননি দিল্লির এআইসিসির নেতারা। সে কথা কবুল করে এখন তাঁরা দোষ চাপাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহের উপরে। তাঁদের অভিযোগ, যে নরেন্দ্র মোদী মুখে সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বড় বড় কথা বলেন, তিনিই গণতন্ত্রের টুঁটি চিপে অর্থ বলে চাপ দিয়ে কংগ্রেস বিধায়কদের শিবির বদল করালেন। অরুণাচলের পর মেঘালয়, মণিপুরেও নজর রয়েছে বিজেপির। তবে তাদের পাল্টা প্রশ্ন, কংগ্রেস নিজের বিধায়কদের সামলাতে না পারলে দায় কার?
গত বেশ কয়েক দশক ধরেই দেখা গিয়েছে, দিল্লিতে যার সরকার, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি সেই দলের দিকেই ঝোঁকে। তাদের ধারণা, কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এগোলে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পাওয়া সহজ হয়। দলবদলের যুক্তি হিসেবে আজ সে কথাকেই সামনে এনেছেন পেমা। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের ঘাড়ে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই তাঁরা কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর অরুণাচলের দলত্যাগী বিধায়করা জানাচ্ছেন, পেমারা কংগ্রেসে যাওয়ার পরে কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করা হচ্ছিল। উন্নয়নে টাকা পেতে সমস্যা হচ্ছিল। ছিল অন্য বিভিন্ন চাপ ও মন্ত্রীদের নিজের স্বার্থের প্রশ্নও। তার পরই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে পৌঁছনোর কথা ভাবা হয়।