হাসপাতালে বাচ্চাদের সঙ্গে শীতল ছবি: ফেসবুক।
প্রতিদিন সকালে উঠে রঙিন পরচুলা এবং নাক-গালে লাল রং মেখে বেরিয়ে পড়েন শীতল আগরওয়াল। এক এক দিন দিল্লির এক একটি হাসপাতাল তাঁর গন্তব্য। না চিকিৎসকের কাছে নয়, তিনি যান হাসপাতালে ভর্তি বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করতে। তারা কেউই তাঁর পরিচিত নন। কিন্তু শীতলকে দেখলেই তাদের মুখে হাসি ফোটে। কারণ তিনি তো তখন জোকারের ছদ্মবেশে তাঁদের সঙ্গে মজা করতে ব্যস্ত। আসলে এ ভাবেই ‘হাসি বিক্রি’ করেন শীতল ও তাঁর সংস্থা ‘ক্লাউনসেলর্স’-এর সদস্যরা।
শীতল জানিয়েছেন, ‘ক্লাউনসেলিং’ বা ‘মেডিক্যাল ক্লাউনিং’ একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি বাচ্চাদের কষ্ট, মানসিক চাপ দূর করে তাদের মুখে হাসি ফোটানো যায়। তাই পেশায় অধ্যাপিকা হওয়ার পরেও দিনের একটা সময় বাচ্চাদের জন্য রাখেন তিনি।
কিন্তু হঠাৎ কেন এই কাজ শুরু করলেন শীতল? তার পিছনেও রয়েছে একটি গল্প। ২০১৬ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শীতল। সেই সময় তিনি এক তরুণীকে দেখেন জোকার সেজে সবাইকে হাসাতে। তিনিও বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে এই কাজ করতেন। তাঁর কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে সুস্থ হয়ে নিজেই খুলে ফেলেন একটি সংস্থা। নাম দেন ‘ক্লাউনসেলর্স’।
হাসপাতালে গিয়ে কাজ করার জন্য দিল্লি সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়েছিল শীতলকে। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে আরও পাঁচ জন সংস্থায় নাম লেখান। তাঁরাই এখন বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে বাচ্চাদের হাসাচ্ছেন। মজার মজার ভিডিয়ো তুলে প্রকাশ করছেন নেটমাধ্যমে। তাঁদের দেখে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট ভুলে মুখে হাসি ফুটছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের। এ ভাবেই হয়তো অসুস্থদের সুস্থ করে তোলার এক অন্য পথের হদিশ দিচ্ছেন শীতলরা। শীতল এবং তাঁর সংস্থার কাজ দেখে সুকুমার রায়ের ‘আহ্লাদী’ কবিতা মনে পড়তে বাধ্য। ওঁদের দেখে বলতেই হয়, ‘উঠ্ছে হাসি ভস্ভসিয়ে সোডার মতন পেট থেকে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy