পীযূষ গয়াল
অন্য কারও চোখে আলো ফোটানোর আকাঙ্ক্ষায় চোখ দান করেন অনেকে। রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল দান করতে চাইছেন তাঁর ই-চক্ষু! যাতে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত জানতে পারেন রেলের কাজকর্মের গতিপ্রকৃতি। যাতে ভোটের মুখে রেলই হয়ে উঠতে পারে কেন্দ্রের শাসক দলের তুরুপের তাস।
তাঁর ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পে সাড়া দিয়ে পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ নজর দিতে চেয়েছিল রেল। বুলেট ট্রেনের প্রকল্প নিয়ে উৎসাহ থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন— সব কিছুতেই তিনি তৎপর। লোকসভা নির্বাচনের আগে সারা দেশে রেলকেই ‘উন্নয়নের মার্কশিট’ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। প্রধানমন্ত্রীর এই ভাবনার দোসর রেলমন্ত্রীও।
সেই জন্য রেলে যাত্রী পরিষেবা এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে সরকারি ভূমিকার প্রচার তো ছিলই। এ বার রেল পরিচালনার দৈনন্দিন হালহকিকতও জনতাকে জানাতে চান গয়াল। তাই নিজের ব্যবহারের ‘ই-দৃষ্টি’ সফটওয়্যারের দরজা সাধারণের জন্য খুলে দিতে চান তিনি। রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, খুব তাড়াতাড়ি ওই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন রেলমন্ত্রী। শীর্ষ কর্তাদের কাছে নিজের এমন ইচ্ছের কথা জানিয়ে রেখেছেন গয়াল।
কয়েক মাস আগে রেলের নিজস্ব তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফর্মেশেন সিস্টেম (ক্রিস) রেলমন্ত্রীর জন্য ই-দৃষ্টি নামে একটি বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি করেছে। এই ব্যবস্থায় নিজের ঘরে বসে মাউসে ক্লিক করে দেশের যে-কোনও জ়োনে ট্রেন চলাচলের অবস্থা থেকে পণ্য পরিবহণের হিসেব, নির্মীয়মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি থেকে আইআরসিটি-র রান্নাঘর— সব কিছুই খুঁটিয়ে দেখতে পারেন রেলমন্ত্রী।
মন্ত্রকের আধিকারিকেদের দাবি, এই ব্যবস্থা তৈরি হওয়ার পরে রেল পরিচালনায় গতি বেড়েছে। সরাসরি মন্ত্রীর নজরদারির আওতায় এসে পড়ায় কাজে দায়বদ্ধতা বেড়েছে আধিকারিকদের। গত কয়েক বছরে রেলে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং নতুন প্রকল্পের খাতে সরকারি বরাদ্দ অনেকটাই বেড়েছে। তাই কোন প্রকল্পে কেমন অগ্রগতি হচ্ছে, তা সকলকে জানাতে আগ্রহী রেলমন্ত্রী।
নতুন ট্রেন হোক বা নতুন সেতু, নতুন রেলপথ হোক বা নিজের কেন্দ্রে রেল ইঞ্জিন— রেল সংক্রান্ত প্রায় সব ধরনের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহ যথেষ্টই। এমনকি কর্মসংস্থান নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতেও রেলে বিপুল নিয়োগকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে তাঁর সরকার। রেলের দৈনন্দিন কাজকর্মকে আমজনতার সামনে তুলে ধরতে চাওয়া ওই প্রক্রিয়ারই অঙ্গ বলে মনে করছেন শীর্ষ রেলকর্তাদের একাংশ।
ই-দৃষ্টি সফটওয়্যারের দরজা জনতার জন্য খুলে দেওয়া হলে বিভিন্ন নির্মীয়মাণ রেল প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবেন। রেলের কোন অঞ্চলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের হাল কেমন, তা-ও জানা যাবে অনায়াসে। ফলে ওই ব্যবস্থা চালু হলে রেলের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়েও মানুষের আগ্রহ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy