ফাইল চিত্র।
সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর টোকিয়ো সফরের কর্মসূচি। রবিবার রাতেই তিনি রওনা হয়েছেন জাপানে। প্রথম দিন জাপানের বিভিন্ন বাণিজ্য-কর্তা এবং ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলাপ আলোচনা থাকলেও মঙ্গলবারটা শীর্ষ কূটনৈতিক গুরুত্বের দিন। সে দিন শুধু চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াড-এর বৈঠক নয়, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ছাড়াও জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক করবেননরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রীর সফর শুরু হওয়ার আগে দেশের নতুন বিদেশসচিব বিনয় কোয়াত্রা তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জানিয়েছেন, কোয়াড চেষ্টা করবে ঋণগ্রস্ত দেশগুলির বোঝা কমানোর জন্য পরিকাঠামো তৈরি করতে। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, খুব স্বাভাবিক ভাবেই, নাম না করে বর্তমান ভূকৌশলগত এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে চিনের দিকে তর্জনী নির্দেশ করে এই যাত্রাটি শুরু করেছেন মোদী। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরে ভূকৌশলগত রাজনীতিতে মেরুকরণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ভারত এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষ অবলম্বন করেনি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জে কোনও নিন্দামূলক প্রস্তাবে ভোট না দিয়েও আমেরিকা, ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের অগ্রগতি ঘটানোর চেষ্টায় রয়েছে। কিন্তু পূর্ব লাদাখে গত দু’বছর থানা গেড়ে বসে থাকা চিনের উপরে বর্তমানে যে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তার সুযোগ নিতে চায় নয়াদিল্লি। মোদীর টোকিয়ো সফরকে সেই প্রিজ়মেই দেখছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।
টোকিয়োতে আসন্ন কোয়াড সম্মেলনের আগেই বাইডেন প্রশাসন এই গোষ্ঠীকে শক্তিশালী করার জন্য বিরাট অঙ্কের ডলার ঢালার কথা ঘোষণা করেছিল। বাইডেনের প্রস্তাবিত ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে সমুদ্রপথে অংশীদার দেশগুলির মধ্যে সংযোগ তথা বাণিজ্যিক যোগাযোগের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ক্ষমতা বাড়ার কথা। তবে ভারত এখনই এই প্যাকেজ নিয়েবিশেষ মাথা ঘামাতে রাজি নয়। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আসন্ন বৈঠকে ভারত এই পরামর্শই দেবে যে, কোয়াড-এর বিভিন্ন উদ্যোগের (কোভিডের টিকা, বাণিজ্য, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও উচ্চ প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, মহাকাশ, সহযোগিতা) মধ্যে যেন নিরাপত্তা ক্ষেত্রে কৌশলগত সহযোগিতার বিষয়টি পিছনে না চলে যায়। তার কারণ, এখনও পর্যন্ত কোয়াড বৈঠকে আফগানিস্তান, মায়ানমার, উত্তর কোরিয়া, এবং সমুদ্র নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হলেও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনও চতুর্দেশীয় সহযোগিতা গড়ে ওঠেনি। যা রয়েছে তা কোয়াডের চারটি দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক।এই চারটি দেশই একে অন্যের সঙ্গে ‘টু প্লাস টু’ মেকানিজ়মে যুক্ত। তাদের সামরিক বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ ও মহড়া চালু রয়েছে। সম্প্রতি জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া একে অন্যের মাটিতে সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি সংক্রান্ত চুক্তি করেছে। আমেরিকাএবং অস্ট্রেলিয়ারও নিরাপত্তা মেকানিজ়ম রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর রাত্রিকালীন সফর নিয়ে এই সুযোগে প্রচার করেছে বিজেপি। তাদের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় টুইট করে বলেছেন, সময় এবং খরচ বাঁচানোর জন্যই রাতে বিদেশভ্রমণের পন্থা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মালবীয়ের বক্তব্য, এই মাসে পাঁচটি দেশে গিয়েছেন মোদী। কিন্তু সেই দেশগুলিতে থেকেছেন মাত্র তিন রাত। সময় ও খরচ বাঁচাতে চারটি রাতই কাটিয়েছেন বিমানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy