Advertisement
E-Paper

‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ বলে কিছুই হয় না! জালিয়াতির নতুন পন্থায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রও, সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশবাসীকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ প্রসঙ্গে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। জানালেন, এই ধরনের কোনও গ্রেফতারির কথা আইনে উল্লেখ নেই। এর থেকে কী ভাবে সুরক্ষিত থাকবেন, সে বিষয়েও পরামর্শ দেন মোদী।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫৯
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’। নামে গ্রেফতার প্রসঙ্গ থাকলেও, গ্রেফতারির সঙ্গে দূরদূরান্তেও এর কোনও যোগ নেই। এটি হল সাইবার প্রতারণার ফাঁদ। অনলাইনে জালিয়াতি চক্রের পাণ্ডাদের হাতে নতুন ‘অস্ত্র’ হয়ে উঠেছে এটি। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেন। সাবধান করে দিলেন ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ বলে কিছু হয় না। দেশের কোনও আইনে এই ধরনের গ্রেফতারির কথা বলা নেই।

‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’র মাধ্যমে কী ভাবে চলে প্রতারণার কারবার? প্রথমে সম্ভাব্য শিকারকে বেছে নেয় জালিয়াতেরা। তার পর সেই শিকারকে ফোন করে বা সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ করে। কখনও পরিচয় দেয় পুলিশ বলে। আবার কখনও কোনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করে। এর পর কোনও একটি ভুয়ো অভিযোগের কথা বলে বিভ্রান্ত করে শিকারকে। কখনও যাঁকে ফাঁদে ফেলা হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর কোনও অভিযোগের কথা বলা হয়। কখনও আবার তাঁর কোনও পরিজনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এর সপক্ষে তাদের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণও রয়েছে। এক বার ফাঁদে পা দিলেই ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করা হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরিকল্পনা আরও নিখুঁত করার চেষ্টা করে প্রতারকেরা। পাঠানো হয় ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট মেমো’ও। সেটিও ভুয়ো। শেষে সেই মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে মোটা টাকা দাবি করা হয়। এই ফাঁদে পা দিয়ে ইতিমধ্যে প্রচুর মানুষ প্রতারিত হয়েছেন।

রবিবার মোদী দেশবাসীকে সাবধান করে বলেন, “ডিজিটাল গ্রেফতারির জালিয়াতি থেকে সতর্ক থাকুন। আইনে এই ধরনের কোনও কিছুর উল্লেখ নেই। তদন্তের জন্য কোনও সরকারি সংস্থা কখনওই আপনার সঙ্গে ফোনে বা ভিডিয়ো কলে যোগাযোগ করবে না।” এই ধরনের প্রতারণার ফাঁদ থেকে সুরক্ষিত থাকতে তিনটি বিষয় মাথার রাখার পরামর্শ দেন মোদী। তাড়াহুড়োয় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার বদলে ঠান্ডা মাথায় বিষয়টি বিবেচনার কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়— “থামুন, ভাবুন এবং তার পরে পদক্ষেপ করুন।”

প্রথমত, অযথা ভয় না পেয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে ফোনকলটি রেকর্ড করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। সম্ভব হলে ‘স্ক্রিন রেকর্ড’ করার কথাও বলেন তিনি। দ্বিতীয়ত, মাথায় রাখতে হবে যে কোনও সরকারি তদন্তকারী সংস্থা অনলাইনে কাউকে ধমক বা হুমকি দেয় না। তৃতীয়ত, যখনই এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটবে, তা ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইনে ফোন করে জানান। হেল্পলাইন নম্বরটি হল ১৯৩০। পাশাপাশি স্থানীয় থানাতেও এ বিষয়ে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেন মোদী।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার থেকে সম্প্রতি একটি অ্যাডভাইজ়রিও প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানেও বলা হয়েছিল এই ধরনের ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ এক ধরনের দুর্নীতি। সাধারণ মানুষকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়ে ওই অ্যাডভাইজ়রিতে বলা হয়েছিল, সিবিআই, পুলিশ, কাস্টমস, ইডি কিংবা বিচারক— কেউই ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেন না।

সাম্প্রতিক কালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই ধরনের সাইবার জালিয়াতির ফাঁদে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। সম্প্রতি ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’র ফাঁদে ফেলা হয়েছিল কলকাতার বাসিন্দা এক মহিলাকেও। গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে তাঁর থেকে লক্ষাধিক টাকা চাওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হলে, কলকাতা পুলিশ একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করেছিল।

Narendra Modi Cyber Crime Cyber fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy