E-Paper

মোদীর অনুপ্রবেশ তির, পাল্টা প্রিয়ঙ্কার

জনসংখ্যার ভারসাম্য পরিবর্তন হলে স্থানীয় সংস্কৃতি কেবল ধ্বংসই হবে তা নয়, আরজেডি ও কংগ্রেস স্থানীয় হিন্দু সমাজের সন্তানদের বিশেষ করে মেয়েদের বিপদের মুখে ঠেলে দেবে বলে অভিযোগ মোদীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৫
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

বিরোধী আরজেডি-কংগ্রেস উত্তর বিহারের সীমাঞ্চল এলাকার জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটাতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর প্রচারে নেমে প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে বিরোধী নেতৃত্বকে অপমান করে চলেছেন, তাতে তাঁর ‘অপমান মন্ত্রক’ নামে নতুন মন্ত্রক খোলা উচিত বলে পাল্টা আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা।

উত্তর বিহারের সীমাঞ্চল এলাকায় (কাটিহার, পূর্ণিয়া, আরারিয়া) বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম অনুপ্রবেশের কারণে জনবিন্যাস অনেকাংশেই পাল্টে গিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। মুসলিম ভোট বেশি হওয়ায় গত বিধানসভা ভোটে ওই এলাকায় বহিরাগত হয়েও ছ’টি আসন জেতে হায়দরাবাদের আসাদুদ্দিন ওয়েইসির দল এমআইএম। বিজেপি খুব ভাল করেই জানে, ওই এলাকায় জনসংখ্যা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে বিরোধী দলগুলির মুসলিম প্রার্থীদের মধ্যে ভোট ভাগাভাগির পাশাপাশি হিন্দু ভোট একজোট হলে তবেই জেতা সম্ভব এনডিএ প্রার্থীদের। রাজনীতিকদের মতে, সে কারণে হিন্দু ভোটকে একজোট করতেই আজ কাটিহারের সভা থেকে অনুপ্রবেশ ও জনসংখ্যার বিন্যাস পাল্টে যাওয়ার জুজু দেখিয়ে সরব হন মোদী। বলেন, ‘‘জনবিন্যাস পাল্টে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে কংগ্রেস ও আরজেডি। তাঁদের লক্ষ্য কেবল ভোটব্যাঙ্ক। যে কারণে অনুপ্রবেশকারীদের স্বার্থরক্ষায় পথে নামছেন নেতারা।’’

জনসংখ্যার ভারসাম্য পরিবর্তন হলে স্থানীয় সংস্কৃতি কেবল ধ্বংসই হবে তা নয়, আরজেডি ও কংগ্রেস স্থানীয় হিন্দু সমাজের সন্তানদের বিশেষ করে মেয়েদের বিপদের মুখে ঠেলে দেবে বলে অভিযোগ মোদীর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেবল কিছু লোকের ভোটের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেস-আরজেডি কট্টরপন্থী দলে পরিণত হয়েছে। সে কারণে এরা অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে পথে নামে, তিন তালাক বা ওয়াকফ আইনকে ছিঁড়ে ফেলার কথা বলে।’’ নিজেদের স্বার্থে দলীয় পার্থক্য ভুলে সব হিন্দুকে এনডিএ-র ছাতার তলায় আসার জন্য আজকের সভা থেকে আহ্বান জানান মোদী। বলেন, ‘‘স্থানীয় মহাদলিত সমাজ-সহ দরিদ্র মানুষ, যাঁরা অনুপ্রবেশকারীদের বিপক্ষে, তাঁরা একজোট হয়ে আরজেডি-কংগ্রেসের ষড়যন্ত্রকে পরাস্ত করুন।’’

আরজেডি-কংগ্রেস জোটের মানসিকতা উন্নয়নবিরোধী বলেও সরব হন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আগে এদের শাসনে লোক যখন সড়কের কথা বলত, আরজেডি বলত, পাকা রাস্তা হলে লোকে গাড়ি চাপা পড়বে। লোকে বিদ্যুৎ চাইলে বলত, বিদ্যুৎ বাড়িতে এলে বাড়ির লোক তড়িদাহত হয়ে মারা যাবে। যেখানে এনডিএ শাসনে বিহার উন্নয়নের পথে ছুটছে, সেখানে বিহারের অতীতকে ভুলিয়ে রাখতে পুত্র তেজস্বী এখন পিতা লালুপ্রসাদের ছবি মঞ্চে রাখছেন না।’’

পাল্টা আক্রমণে মোদীর উন্নয়নের তত্ত্বকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। আজ পটনার জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘গত দু’দশকে বিহারের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা তলানিতে।। স্কুলে শিক্ষক নেই। হাসপাতালে চিকিৎসক নেই। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষ পদ খালি রয়েছে। উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।’’

আজ বিহারের সহর্ষ জেলার শোনবর্ষা এলাকায় প্রচারে গিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে বিরোধীদের কুকথা বলার অভিযোগে সরব হন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা। তাঁর কথায়, ‘‘গত কুড়ি বছর ধরে বিহারে ক্ষমতায় রয়েছে এনডিএ জোট। কিন্তু শাসক শিবিরের নেতাদের মুখে কোনও উন্নয়নের কথা নেই। পরিবর্তে বিরোধী নেতাদের কুকথা বলে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আসলে গত দু’দশকে বিহারে এনডিএ শাসনে কোনও উন্নয়ন হয়নি। যুবকেরা কাজ খুঁজতে রাজ্যের বাইরে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। শিল্পের নামগন্ধ নেই। বিহার চলছে দিল্লি থেকে।’’ ক্ষমতায় এসে সবার আগে যুবকদের অন্য রাজ্যে চলে যাওয়া আটকানোর উপর জোর দেন প্রিয়ঙ্কা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PM Narendra Modi Bihar Assembly Election 2025 Bihar Demography BJP Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy