রেলপথে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে জুড়ে গেল মিজ়োরাম। ৮০৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বৈরবী-সৈরাং রেললাইনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উত্তর মিজ়োরামের বৈরবী রেলপথে অসমের শিলচরের সঙ্গে যুক্ত। এই রেলপথ ধরে প্রথম বারের জন্য ট্রেনের চাকা গড়াতে চলেছে মিজ়োরামে। এই রেলপ্রকল্পের উদ্বোধন করে মোদী বলেন, “আজ থেকে মিজ়োরামের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটল।” শনিবার মিজ়োরাম থেকেই মোদী যাবেন উত্তর-পূর্বের আর এক রাজ্য মণিপুরে।
প্রায় আড়াই বছরের সংঘর্ষ পর্বের পর এই প্রথম মণিপুর সফরে যাচ্ছেন মোদী। মণিপুর সফরে মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফল এবং কুকি অধ্যুষিত চুরাচান্দপুর— দুই জায়গাতেই যাবেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার বেলায় আইজ়ল থেকে মণিপুরে পৌঁছোনোর কথা তাঁর। প্রথমেই তিনি চুরাচান্দপুর ষাবেন। সংঘর্ষ-পর্বে ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। শুনবেন তাঁদের অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, চুরাচান্দপুরে একটি জনসভা করার কথা। তবে তার আগে কিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর করবেন মোদী। চুরাচান্দপুর থেকে ইম্ফলে যাবেন তিনি। সেখানেও ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার আইজ়লে মোট ৯০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। পাহাড়ি পথে বৈরবী-সৈরাং রেললাইন তৈরি করতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। মিজ়োরামের রাজধানী আইজ়ল যাওয়ার পথে ৪৫টি সুড়ঙ্গ, ৫৫টি বড় সেতু এবং ৮৮টি ছোট সেতু অতিক্রম করবে। আইজ়লের লেংপুই বিমানবন্দরে নেমে হেলিকপ্টারে শহরের লাম্মুনাল মাঠে যাওয়ার কথা ছিল মোদীর। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য বিমানবন্দর থেকেই ভার্চুয়াল বক্তৃতা করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিজ়োরামের মুখ্যমন্ত্রী লালডুহোমা, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব প্রমুখরা।
নিজের বক্তৃতায় বৈরবী-সৈরাং রেললাইন তৈরির জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের ধন্যবাদ জানান মোদী। তিনি বলেন, “পাহাড়ি রাস্তায় বহু প্রতিকূলতার সঙ্গে মোকাবিলা করে আজ এই রেললাইনের উদ্বোধন হল। আমাদের ইঞ্জিনিয়র এবং কর্মীদের মনোবলের জন্যই এটা সম্ভব হল।” বিরোধীদের নিশানা করে মোদী বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে কিছু রাজনৈতিক দল ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করে এসেছে। কেবল ভোট আর আসন নিয়েই তারা ভেবে এসেছে। গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত, মিজ়োরামের মতো রাজ্য এই মনোভাবের জন্য এত কাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”