কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়মে ‘যৌথ সেনাপতি সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধন করে সোমবার বিহারের পূর্ণিয়ায় গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের। সেই সঙ্গে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বিরুদ্ধে বিহারকে অপমানের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
উত্তরবঙ্গ লাগোয়া সীমাঞ্চল এলাকায় প্রাণকেন্দ্র পূর্ণিয়া বরাবরই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। গত লোকসভায় ওই এলাকায় কিসানগঞ্জ, কাটিহারে জিতেছেন ‘হাত’ প্রতীকের প্রার্থীরা। পূর্ণিয়ায় নির্দল হিসেবে জেতা পাপ্পু যাদব গত মাসে আগাগোড়া ছিলেন রাহুল গান্ধীর ১৬ দিনের ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’য়। এর পর দিল্লিতে রাহুল এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গেও বৈঠকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এই আবহে সোমবার পূর্ণিয়ায় গিয়ে চলতি মাসের গোড়ায় নতুন জিএসটি হার নিয়ে কেরল কংগ্রেসের একটি সমাজমাধ্যমের পোস্টের প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, ‘‘বিহারে নির্মিত রেল ইঞ্জিন আফ্রিকায় রফতানি করা হচ্ছে। যদিও এটি কংগ্রেস এবং আরজেডি নেতাদের পছন্দ নয়। যখনই বিহার উন্নতি করে, তখনই ওই দলগুলি রাজ্যকে অপমান করে। আরজেডির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সমাজমাধ্যমে বিহারের নিন্দায় ব্যস্ত কংগ্রেস। বিড়ির সঙ্গে রাজ্যের তুলনা করছে! ওরা আসলে বিহারকে ঘৃণা করে।’’
আরও পড়ুন:
কেরল প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে গত ৫ সেপ্টেম্বর সমাজমাধ্যমে ওই পোস্টটি করা হয়েছিল। সিগারেট, গুটখা, পানমশলার মতো তামাকজাত দ্রব্যকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার ‘পাপের পণ্য’ বলে চিহ্নিত করে ৪০ শতাংশ কর (আদতে জিএসটি) আরোপ করলেও বিড়িকে কেন সেই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হল, সে প্রশ্ন তোলা হয় ওই পোস্টে। লেখা হয়েছিল, ‘‘বিহার আর বিড়ি দুটোই শুরু হচ্ছে ‘বি’ দিয়ে। তাই নাকি এতে কোনও পাপ নেই।’’ এর পরে রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বাঁধলে কেরল কংগ্রেসের তরফে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনাও করা হয়েছিল।
বিরোধীদের নিশানার পাশাপাশি ভোটমুখী বিহারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী সোমবার নবনির্মিত পূর্ণিয়া বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধরি এবং বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সোমবারই থেকে পূর্ণিয়া-কলকাতা উড়ানের সূচনাও হয়। প্রধানমন্ত্রী সোমবার অদূরে ভাগলপুরের পিরপাঁতিতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শিলান্যাসও করেছেন। যেটি নির্মাণে আনুমানিক খরচ ২৫০০০ কোটি টাকা। এটি বাংলার পড়শি রাজ্যের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিনিয়োগ। এ ছাড়া, ২৬৮০ কোটি টাকার কোশি-মেচি আন্তঃরাজ্য নদী সংযোগ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন তিনি। পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিহারে মাখনা চাষের উন্নয়নের জন্য প্রায় ৪৭৫ কোটি টাকার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’