মাওবাদী উপদ্রুত ছত্তীসগঢ়ে গিয়ে ফের দেশকে মাওবাদী-সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছত্তীসগঢ় রাজ্য গঠনের পর থেকে ২৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বক্সার ডিভিশন এখনও পুরোপুরি মাওবাদী সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেরই তথ্য বলছে, ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের তিনটি জেলা— সুকমা, বিজাপুর এবং নারায়ণপুর ‘অতি প্রভাবিত’। সেই এলাকাগুলিও শীঘ্রই মাওবাদী সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হবে বলে ঘোষণা করলেন মোদী।
ছত্তীসগঢ় রাজ্য গঠনের ২৫ বছর পূর্তিতে রায়পুরে ‘ছত্তীসগঢ় রজত মহোৎসব’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তৃতার করার সময়েই প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে দেশে মাওবাদী উপদ্রুত জেলার সংখ্যা ১২৫ থেকে কমে তিনে নেমে এসেছে। মোদী বলেন, “সন্তানদের জন্য মায়েদের কান্না আমি সহ্য করতে পারতাম না। তাই ২০১৪ সালে যখন আপনারা আমাদের সুযোগ দিলেন, আমরা দেশ থেকে মাওবাদী সন্ত্রাস নির্মূল করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করি। তার ফলে আজ গোটা দেশ দেখছে। ১১ বছর আগে দেশে মাওবাদী উপদ্রুত জেলার সংখ্যা ছিল ১২৫টি। এখন তা কমে মাত্র তিনটি রয়ে গিয়েছে। আমি আপনাদের গ্যারান্টি দিচ্ছি খুব দ্রুত ছত্তীসগঢ়-সহ গোটা দেশ মাওবাদী সন্ত্রাস থেকে মুক্ত হয়ে যাবে।”
গত এপ্রিলে সংসদের বাজেট অধিবেশন-পর্বে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছিলেন, রেড করিডর (‘মাওবাদী মুক্তাঞ্চল’ হিসেবে পরিচিত এলাকা) ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, ২০১৩ সালে ভারতে ১২৬টি জেলা ‘মাওবাদী উপদ্রুত’ ছিল। ২০২৫ সালের এপ্রিলে তা নেমে এসেছে ১৮টিতে। এর মধ্যে ছ’টি ‘অতি প্রভাবিত’ এবং ১১টি ‘মাওবাদী প্রভাবিত’ জেলা। তার ছ’মাস পরেই গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, ‘অতি প্রভাবিত’ জেলার সংখ্যা ছয় থেকে কমে তিন হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী মোদী আলাদা করে কোনও জেলার নাম উল্লেখ করেননি শনিবার। তবে তিনি যে ‘অতি প্রভাবিত’ এই তিন জেলার কথাই বলছেন, তা সহজেই অনুমেয়। যে তিনটি জেলার কথা তিনি বোঝাতে চাইলেন, সেই তিনটি জেলাই ছত্তীসগঢ়েরই। মোদীর দাবি, মাওবাদীদের উপদ্রবের কারণেই আদিবাসী এলাকাগুলি দীর্ঘ সময় ধরে ন্যূনতম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত থেকেছে। তিনি বলেন, “বহু বছর ধরে আদিবাসী গ্রামগুলিতে রাস্তা, স্কুল এবং হাসপাতালের অভাব ছিল। যেগুলি ছিল, সেগুলিও বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক এবং শিক্ষকদের হত্যা করেছে।” এ প্রসঙ্গে অতীতের কংগ্রেস জমানাকেও নিশানা করেন তিনি। মোদীর দাবি, অতীতে কংগ্রেস জমানায় এগুলির বিরুদ্ধে কিছুই পদক্ষেপ করা হয়নি।