Advertisement
E-Paper

মোদীর ‘মিত্র’ ময়ূর, কেউ মুগ্ধ, কারও কটাক্ষ

রবিবারের সকালে চেনা ছবির বাইরে নিজের প্রাত্যহিক জীবনের কিছু ‘অপরিচিত’ মুহূর্তের ছবি তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২০ ০৩:২৭
জাতীয় পাখিকে দানা খাওয়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার এই ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়েছেন তিনি নিজেই।

জাতীয় পাখিকে দানা খাওয়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার এই ছবি সমাজমাধ্যমে দিয়েছেন তিনি নিজেই।

‘ভোর ভয়ো, বিন শোর, মন মোর, ভয়ো বিভোর’।

কখনও তিনি ফতুয়া-ধুতি পরে দোলনায় বসে মন দিয়ে ফাইল পড়ছেন। পা রাখা ছোট-ছোট পাথর সাজানো ট্রে-তে। পাশে ময়ূর দানা খেয়ে যাচ্ছে। কখনও আবার লোক কল্যাণ মার্গের বাসভবনের সিঁড়ি বা মেঝেতে বসে নিজের হাতেই ময়ূরীদের দানা খাওয়াচ্ছেন। গেরুয়া রঙের টি-শার্ট ও ট্র্যাকস্যুটে তিনি প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছেন বা কুর্তার উপরে পোলকা-ডট অঙ্গবস্ত্র চাপিয়ে হাঁটাহাঁটি করছেন। পাশে ময়ূর পেখম মেলেছে।

রবিবারের সকালে চেনা ছবির বাইরে নিজের প্রাত্যহিক জীবনের কিছু ‘অপরিচিত’ মুহূর্তের ছবি তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে ময়ূর ও প্রকৃতি-প্রেম নিয়ে দীর্ঘ হিন্দি কবিতা। প্রধানমন্ত্রীর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটারে ১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ভিডিয়ো রবিবারের সকালে ‘ভাইরাল’ হল। বিজেপি নেতারা বললেন, ‘আহা, এক বিরল মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া গেল!’ আর বিরোধীরা বিস্মিত— প্রধানমন্ত্রী যখন প্রাতর্ভ্রমণে বার হন, তখনও তাঁকে ক্যামেরা ধাওয়া করে!

করোনা-কালে নরেন্দ্র মোদীর সাদা চুল-দাড়ির দৈর্ঘ্য বেড়েছে। বিজেপি নেতারা এখন তাঁকে দেখে বলেন, সাক্ষাৎ যেন রামায়ণ-মহাভারত থেকে উঠে আসা চরিত্র! ঠিক যেন মহর্ষি! এবং সেই কারণেই তাঁর হাত থেকে নিশ্চিন্তে ময়ূর দানা খেয়ে যায়— এমন ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কেউ কেউ। যা শুনে বিরোধীরা বলছেন, এ হল প্রধানমন্ত্রীকে সাধারণ মানুষের পোশাকে দেখিয়ে, তাঁর জাগতিক সুখ সম্পর্কে উদাসীন, প্রকৃতিপ্রেমী ভাবমূর্তি গড়ে তোলার চেষ্টা। ভিডিয়ো দেখেই স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রীর ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম-টুইটার সামলানোর দায়িত্বে থাকা ‘সোশ্যাল মিডিয়া টিম’-কে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে এই ভিডিয়ো তৈরি করানো হয়েছে। না-হলে প্রধানমন্ত্রী সকালে হাঁটার সময়ে বা সরকারি ফাইল পড়ার সময়ে কেউ ছবি তুলতে পারে নাকি!

আরও পড়ুন: ট্রাম্প ‘নিষ্ঠুর’, গোপনে স্বীকারোক্তি তাঁর দিদির

যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বি ভি শ্রীনিবাসের প্রশ্ন, ‘‘যখন গোটা দেশ অতিমারি, বেকারত্ব, পড়ুয়াদের সমস্যা, ভঙ্গুর অর্থনীতির আঘাতে জ্বলছে, তখন ময়ূরের সঙ্গে কে খেলা করে?’’ প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী এমনই। তিনি প্রকৃতির সঙ্গেই থাকতে ভালবাসেন। নিজের বাসভবনে তিনি চবুতরা বসিয়েছেন। যেখানে পাখিরা বাসা তৈরি করতে পারবে। তাদের নিজের হাতে খাওয়ান। বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এক সময়ে অ্যাডল্‌ফ হিটলারকেও এ ভাবে পশুপ্রেমী হিসেবে তুলে ধরা হত। হিটলার হরিণছানাদের খাওয়াচ্ছেন, এমন ছবি নাৎসি পার্টি প্রচার করত।

সমালোচকরা যা-ই বলুন, বিজেপি নেতারা ‘মন্ত্রমুগ্ধ’। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা মুকুল রায় টুইট করেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী এক জন ব্যক্তিত্ব, যাঁর সোনার হৃদয় সহানুভূতির প্রতীক, তাঁর এমন মোহিত করে দেওয়া দৃশ্যের সাক্ষী হচ্ছি। এই মন্ত্রমুগ্ধ করা মুহূর্তে দেশের সংস্কৃতি ও মানবতা মিশে গিয়েছে।’’

ছোটবেলায় নাকি নদী থেকে কুমিরছানা ধরে এনেছিলেন মোদী। ছাত্রছাত্রীদের জন্য তাঁর জীবনীর কমিক্সে ছাপাও হয়েছিল সেই ঘটনা। রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াল ব্যঙ্গচিত্র। নিজস্বী তুলছে ময়ূর। পাশে মুখ ভার করে দাঁড়িয়ে কুমির বলছে, ‘‘ভুলে যেয়ো না আমায়।’’

Narendra Modi Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy