Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Biden Modi talk

বাইডেনকে ফোন মোদীর, কৌশলগত সম্পর্ক মজবুত করার অঙ্গীকার

আগামী দিনে ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ফোনালাপ জরুরি ছিল।

২০১৪ সালে বাইডেনের সঙ্গে মোদী। ফাইল চিত্র।

২০১৪ সালে বাইডেনের সঙ্গে মোদী। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ১০:৩৬
Share: Save:

আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার মধ্যরাতে টুইট করে এ কথা নিজেই জানিয়েছেন মোদী। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় বাইডেনকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ভারত-আমেরিকার কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার কথাও বাইডেনকে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকার হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকেও শুভেচ্ছা জানানোর কথা বাইডেনকে বলেছেন তিনি। আগামী দিনে ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ফোনালাপ জরুরি ছিল।

প্রসঙ্গত, বাইডেনের সঙ্গে মোদীর শেষ সাক্ষাৎ হয়েছিল ২০১৪ সালে। বারাক ওবামার জমানায় বাইডেন তখন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট। মোদীর আমেরিকা সফরে ওয়াশিংটনে ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কথা হয় দু’জনের।

বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে মোদী টুইটে লিখেছেন, ‘আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ফোনে শুভেচ্ছা জানালাম। ভারত এবং আমেরিকার কৌশলগত সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি আগামী দিনেও বজায় রাখার অঙ্গীকার করেছি আমরা। জলবায়ু পরিবর্তন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সহযোগিতা, কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবিলার মতো বিষয়গুলি নিয়েও কথা হয়েছে’।

মঙ্গলবার রাতের ফোনালাপে কমলা হ্যারিসকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোদী। তাঁর টুইট, ‘কমলা হ্যারিসকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তাঁর সাফল্য ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান সম্প্রদায়ের কাছে গর্বের ব্যাপার’। প্রসঙ্গত, মোদীর আগেই কিন্তু রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাইডেন এবং হ্যারিসকে।

প্রসঙ্গত, অতীতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর ‘সখ্য’ ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ বা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে গুজরাতে ‘নমস্তে ট্রাম্প’-এর মধ্যে দিয়ে সেই সম্পর্ক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিল। দুই রাষ্ট্রনেতার ব্যক্তিগত সম্পর্কের রসায়নের প্রমাণ হিসেবেই বিশ্ব ওই কর্মসূচিগুলিকে দেখেছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, রাজনৈতিক অবস্থানের নিরিখে মোদী এবং ট্রাম্প একই মেরুর বাসিন্দা। তবে মোদীর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও আমেরিকায় অভিবাসী নীতি নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান ছিল যথেষ্ট কঠোর। অন্যদিকে, ভারতে ‘অনুপ্রবেশকারী’দের নিয়ে মোদী সরকারের ‘কঠোর’ অবস্থানের কথা সকলেরই জানা। এইচ১বি ভিসা নিয়ে ট্রাম্প জমানায় যে কড়াকড়ি হয়েছে, বাইডেন জমানায় তার পরিবর্তন হতে পারে বলে আশা করছে ওয়াকিবহাল মহল। সেটা হলে কিঞ্চিৎ স্বস্তিতে থাকবে নয়াদিল্লি। এমন পরিস্থিতিতে মোদী-বাইডেন কথা ভারত-আমেরিকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাই আরও ‘তাৎপর্যপূর্ণ এবং জরুরি’।

বস্তুত, ট্রাম্পকে হারিয়ে আমেরিকার ৪৬ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন। তার পরেই প্রশ্ন উঠছে, অভিবাসন নীতিতে ট্রাম্পের অবস্থানই কি বজায় রাখবেন বাইডেন? পাকিস্তানের ব্যাপারেই বা কী মনোভাব দেখাবেন তিনি? এই বিষয়গুলি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে আগামী দিনে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে ভারত যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছে, তা একরকম স্পষ্ট। মঙ্গলবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করএক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ়তার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমলেও ভারতের কোনও সমস্যা হবে না। আমেরিকার নির্বাচনী ফল ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না। জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক যেখানে শেষ হবে, সেখান থেকেই শুরু হবে নতুন সম্পর্ক। এ নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী। এই কাজটাই আমরা শেষ ৪টি আমেরিকান প্রশাসনের সঙ্গে করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE