Advertisement
E-Paper

২৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার, গ্রেফতার তিন জন চিকিৎসক! দিল্লির বিস্ফোরণে কি যোগ সেই চক্রেরই? খুঁজছেন তদন্তকারীরা

দিল্লির বিস্ফোরণের নেপথ্যে এখনও নাশকতার কোনও স্পষ্ট প্রমাণ না-মিললেও আত্মঘাতী হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দিল্লি বিস্ফোরণের পর প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ফরিদাবাদে বিস্ফোরক মজুতের যে চক্র রয়েছে, তারাই জড়িত দিল্লি বিস্ফোরণে?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৫ ২৩:৫৩
(বাঁ দিকে উপরে) উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক এবং দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে গাড়িতে বিস্ফোরণ (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে উপরে) উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক এবং দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে গাড়িতে বিস্ফোরণ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

দিল্লির অদূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে সোমবার ৩৬০ কেজি আরডিএক্স তৈরির মশলা উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, গত কয়েক দিনে দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে মোট ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক! কেন এত বিস্ফোরক মজুত করা হয়েছিল? কোনও নাশকতার ছক কষা হচ্ছিল কি? কোথায় কোথায় হামলার পরিকল্পনা ছিল? এমন নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। তার মধ্যেই সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লার সামনে এক গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।

দিল্লির বিস্ফোরণের নেপথ্যে এখনও নাশকতার কোনও স্পষ্ট প্রমাণ না-মিললেও আত্মঘাতী হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দিল্লি বিস্ফোরণের পর প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ফরিদাবাদের বিস্ফোরক মজুতের চক্রই জড়িত দিল্লি বিস্ফোরণে? ঘটনাচক্রে লালকেল্লার সামনে যে গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটির রেজিস্ট্রেশন হরিয়ানার জনৈক সলমনের নামে ছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। গাড়ির নম্বর প্লেটও হরিয়ানার। দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট না-হলেও সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।

শুধু আরডিএক্স তৈরির মশলা নয়, সোমবার ফরিদাবাদে হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযানে উদ্ধার হয়েছে আরও অনেক আগ্নেয়াস্ত্র। এ ছাড়াও ২০টি বোমার টাইমার, রিমোট এবং ওয়াকিটকিও পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে একাধিক পিস্তল এবং একে ৪৭ রাইফেল। কোথা থেকে এত অস্ত্র, বিস্ফোরক এল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তিন চিকিৎসকেরও।

গত মাসের ১৯ অক্টোবর এই মামলার সূত্রপাত। কাশ্মীরে নাশকতার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি একটি বিশেষ গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে। সামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে তৈরি হত নাশকতার ছক। এমন খবর পাওয়ার পরেই তদন্তে নামে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। সেই তদন্তে নেমে ১৯ অক্টোবর শ্রীনগরে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের সমর্থনে পোস্টার সাঁটার অভিযোগে চিকিৎসক আদিল আহমেদ র‌্যাদারকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তদন্তকারীরা। একে একে বেরিয়ে আসে কয়েক জনের নাম।

আদিলকে জেরা করে আরও চিকিৎসকের হদিস পায় পুলিশ। তদন্তকারী সূত্রে খবর, কাশ্মীরে নাশকতার উদ্দেশে যে বিশেষ গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে, তারা সামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে তৈরি করত নাশকতার ছক। এ ছাড়া, ব্যক্তিবিশেষকে চিহ্নিত করে জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এই চক্রের তদন্তে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে কাশ্মীর পুলিশ। ধৃতেরা হলেন, আরিফ নিসর দার, ইয়াসির-উল-আসরফ, মকসুদ আহমেদ দার, ইরফান আহমেদ, জ়ামির আহমেদ। আদিলের সূত্র ধরে খোঁজ মেলে চিকিৎসক মুজ়াম্মিল আহমেদের। জেরায় প্রকাশ্যে আসে ফরিদাবাদের বিস্ফোরকের খবর।

পুলওয়ামার বাসিন্দা হলেও মুজ়াম্মিল ফরিদাবাদের একটি হাসপাতালে কর্মরত। অভিযোগ, তাঁর সাহায্যেই ৩৬০ কেজি বিস্ফোরক এবং অস্ত্রশস্ত্র কাশ্মীর থেকে এনেছিলেন আদিল। সোমবার ফরিদাবাদের যে বাড়ি থেকে ৩৬০ কেজি আরডিএক্সের মশলা পাওয়া গিয়েছে, তা একটি ভাড়াবাড়ি। আর সেই বাড়িতেই থাকতেন মুজ়াম্মিল। তদন্তে আরও এক চিকিৎসকের কথা জানতে পারে কাশ্মীর পুলিশ। মুজ়াম্মিল যে হাসপাতালে কাজ করতেন সেই হাসপাতালেরই মহিলা চিকিৎসক শাহিনের হদিস পায় তারা। জানা যায়, তিনি মুজ়াম্মিলের সহযোগী ছিলেন। তাঁর গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় একে-৪৭ রাইফেল। পরে লখনউ থেকে ওই মহিলা চিকিৎসককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বিস্ফোরক উদ্ধারের পর পরই দিল্লিতে নাশকতার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। লালকেল্লার সামনে সিগন্যালে একটি গাড়ি ধীর গতিতে এসে থামতেই বিস্ফোরণ ঘটে! গাড়িটি ছিল হুন্ডাইয়ের আই২০। এমনই জানায় দিল্লি পুলিশ। বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যু ঘটেছে। সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

Delhi Blast terror attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy