একটি নয়, এক জোড়া সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে হরিয়ানার পঞ্চকুলা কাণ্ডে! প্রথমটি ছিল গাড়ির ড্যাশবোর্ডে। দ্বিতীয়টি পাওয়া গিয়েছে একটি ব্যাগের মধ্যে। মিত্তল পরিবারের সাত জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে করছিল পুলিশ। তবে জোড়া সুইসাইড নোট উদ্ধারের পর রহস্য আরও ঘনীভূত হয়ে উঠেছে।
পঞ্চকুলার ঘটনায় প্রথমে একটি সুইসাইড নোটই পাওয়া গিয়েছিল। গাড়ির সামনের অংশে ড্যাশবোর্ডে রাখা ছিল সেটি। পরে গাড়িতে তল্লাশির সময়ে আরও একটি সুইসাইড নোটের সন্ধান মেলে। গাড়ির মধ্যে একটি ব্যাগের ভিতর থেকে ডায়েরি পাওয়া গিয়েছে। সেই ডায়েরির মধ্যেই রাখা ছিল দ্বিতীয় নোটটি। দু’টি সুইসাইড নোট কি এক জনই লিখেছিলেন? কেন দু’টি নোট লেখার প্রয়োজন পড়ল, দু’টি আলাদা জায়গায় কেন রেখে দেওয়া হল? এই বিষয়গুলি ভাবাচ্ছে পুলিশের তদন্তকারী দলকে।
দু’টি সুইসাইড নোটের নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তা ইতিমধ্যে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দু’টি সুইসাইড নোটের হাতের লেখা এবং ভাষার ব্যবহার বিশ্লেষণ করতে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চকুলার ডেপুটি কমিশনার হিমাদ্রি কৌশিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে সম্ভাব্য সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে উদ্ধার হওয়া ওই দু’টি সুইসাইড নোট খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করছেন ডিসিপি।
তদন্তে উঠে এসেছে হরিয়ানার মিত্তল পরিবার আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। ঋণে জর্জরিত ছিল পরিবার এবং তা নিয়ে মানসিক ভাবেও বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। উদ্ধার হওয়া দু’টি সুইসাইড নোটের বয়ান একই কি না, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট ভাবে কিছু জানানো হয়নি পুলিশের তরফে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সুইসাইড নোটে পরিবারের অর্থসঙ্কটের কথা বলা হয়েছে। আত্মীয় পরিজনদের কাছেও কোনও সাহায্য না-পেয়ে সুরাহার আশা এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছিল তারা। তদন্তকারীদের অনুমান, ঋণের টাকা মেটানোর সামর্থ্য না থাকাতেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় মিত্তল পরিবার।
আরও পড়ুন:
গত সোমবার হরিয়ানার পঞ্চকুল্লার সেক্টর ২৭-এ মিত্তল পরিবারের ছ’জনের দেহ উদ্ধার গাড়ির ভিতর থেকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় এক জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন গৃহকর্তা প্রবীণ মিত্তল (৪২), তাঁর স্ত্রী রিনা, বাবা দেশরাজ (৭০), মা বিমলা (৬৮) এবং প্রবীণের তিন সন্তান হার্দিক (১৩), দলিশা (১১) ও ধ্রুবি (১১)। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, প্রায় ২০ কোটি টাকা দেনা ছিল মিত্তল পরিবারের। এক আত্মীয়ের দাবি, দেনা শোধ করতে না পারায় ক্রমাগত হুমকি পাচ্ছিল তারা। আত্মীয়দের কারও সঙ্গে ছ’বছর যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু দেনার কারণেই কি আত্মহত্যা, না কি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে, তা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে।