গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিবাদের স্বর জোরালো হচ্ছিল কয়েক দিনে। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আইন জগতের বিশিষ্ট জনেরা খোলা চিঠি লিখছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন কংগ্রেসের দুই সাংসদ শশী তারুর ও রাজীব গৌড়া। শেষ পর্যন্ত বিহার পুলিশের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, ধর্ম বা জাতের নামে গণপ্রহারের ঘটনা বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দেওয়ায় ‘অপরাধে’ শ্যাম বেনেগল, অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহ-সহ ৪৯ জন বিদ্বজ্জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা চালানো হবে না। বরং, ভিত্তিহীন মামলা করায় অভিযোগকারী সুধীর ওঝার বিরুদ্ধেই এ বার পাল্টা মামলা করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে চলায় উদ্বেগ এবং ওই প্রবণতা রুখতে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দেওয়ার পরে বিহারের মুজফ্ফরপুরে অপর্ণা, শ্যামদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী রুজু হয় মামলা। কেরল ও কর্নাটকের দুই কংগ্রেস সাংসদ তারুর ও গৌড়া সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেই চিঠি লিখে প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপের আর্জি জানান। রোমিলা থাপার, নাসিরুদ্দিন শাহ-সহ প্রায় ১৮০ জন বিশিষ্ট খোলা চিঠি দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, আদালতকে অপব্যবহার করে এমন হেনস্থা কি আসলে নাগরিকদের কণ্ঠরোধ করারই কৌশল? প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাতে শুরু করে এসএফআই-সহ একাধিক বাম সংগঠন। বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়ের সূত্রে বুধবার অপর্ণার সঙ্গে কথা হয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জানান, অপর্ণাদের এই প্রতিবাদে তাঁরাও সঙ্গে আছেন।
এ সবের প্রেক্ষিতেই এ দিন বিহার পুলিশের মুখপাত্র জিতেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, অপর্ণাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার কোনও ভিত্তি নেই। জেলার পুলিশ সুপারকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘বিদ্বেষপূর্ণ মিথ্যা’ অভিযোগ করা হয়েছে বলেই পুলিশ মনে করছে। অভিযোগকারী এমন অভিযোগ করে প্রচারে আসতে চেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হবে এবং অপর্ণাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার কয়েক দিনের মধ্যেই আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়ে দেবেন, ওই অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। মামলা গুটিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদনও জানানো হবে। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা সুশীল মোদীও অভিযোগকারী ওঝাকে ‘ধারাবাহিক মামলাবাজ’ আখ্যা দিয়েছেন। রামবিলাস পাসোয়ানের লোকজনশক্তি পার্টির ঘনিষ্ঠ ওঝার অভিযোগের জেরে অস্বস্তিতে পড়েছিল নীতীশ কুমারের সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy