কংগ্রেস ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছে, এটা নিঃসন্দেহে জাতীয় স্তরে বিরোধী রাজনীতির ক্ষেত্রে ধাক্কা। তার কারণ, মহারাষ্ট্রে শুধু মাত্র কোনও আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট গড়ে বিজেপিকে আটকানো হয়নি। এমন একটি দলের সঙ্গে (শিবসেনা) জোট গড়া হয়েছিল, যারা আদর্শগত ভাবে কংগ্রেসের বিরোধী এবং বিজেপির খুব কাছের। সেই জোট কিন্তু রাজ্যে বিজেপির বেশি আসন থাকা সত্ত্বেও তাদের রুখে দিতে পেরেছিল। এর থেকে বার্তা গিয়েছিল, বিজেপিকে রুখতে সব মতপার্থক্য সরিয়ে একজোট হওয়া সম্ভব। কিন্তু মহারাষ্ট্র মডেল ব্যর্থ হওয়ায় এই ‘এক সঙ্গে আসা’র বার্তায় চোনা পড়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝাড়খণ্ডেও জেএমএম-কংগ্রেস সরকারকে যথেষ্ট ভঙ্গুর দেখাচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যসভার প্রার্থী নিয়ে জেএমএম নেতা হেমন্ত সরেনের সঙ্গে কংগ্রেসের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। এর পর হেমন্তের বিরুদ্ধে পাথর খাদান সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। হেমন্ত সম্মিলিত বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিন্হার মনোনয়নের দিনই গিয়েছেন বিজেপির নাম্বার-টু অমিত শাহের কাছে। বৈঠক করে মুখ খোলেননি তিনি। কিন্তু বোঝা যাচ্ছে, ১৫ জুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী বৈঠকে দলের প্রতিনিধি পাঠালেও বিজেপি-বিরোধী জোটে হেমন্ত আর নেই। এক তৃণমূল নেতার কথায়, “দ্রৌপদী মুর্মু এনডিএ প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানোয় হেমন্তর আসলে সুবিধাই হয়ে গিয়েছে। তিনি দ্রৌপদীর সঙ্গে নিজের আদিবাসী একাত্মতার তাস খেলে বিরোধীদের এড়াতে পারছেন। আসল বিষয় হল, মোদী সরকারে যে ভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক বিরোধী নেতাদের ‘কব্জা’ করছে, হেমন্ত তার নবতম সংস্করণ।” রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এখন আর শুধু মায়াবতীর বিএসপি নয়, জেএমএম, এমনকি এনসিপি-ও (আজই আয়কর দফতরের চিঠি গিয়েছে শরদ পওয়ারের কাছে) কত দূর পর্যন্ত মোদী-বিরোধিতার সুর চড়াবে, তা যথেষ্ট সন্দেহের।
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করেই এগোচ্ছে মোদী সরকার। রাজ্য ধরে ধরে তারা পরিকল্পনা করছে। কোথায়, কী ভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে উস্কে বা সিবিআই-ইডি-কে কাজে লাগিয়ে বিধায়ক ভাঙা যায়। মহারাষ্ট্র বড় রাজ্য। সেখানে সরকারে থাকলে বাড়তি সুবিধা পাবে বিজেপি। অন্য দিকে মহারাষ্ট্রে সরকারে থাকা অবস্থায় লোকসভা ভোটে যে সুবিধাগুলি এনসিপি বা কংগ্রেস পেতে পারত, তা তারা পাবে না।