E-Paper

ভোট হোক সংক্ষেপে, বিহারে জ্ঞানেশদের কাছে আর্জি শাসক-বিরোধীর

কমিশনের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই বলেছেন, দীপাবলি ও ছট উপলক্ষে বাইরে কর্মরত বহু মানুষ বিহারে ফেরেন। ছটের পরে পরেই নির্বাচন করে নিলে তাঁরা একেবারে ভোট দিয়ে ফিরতে পারবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:০৯
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করে বেরোচ্ছেন আরজেডি সাংসদ অভয় কুশওয়াহা (মাঝে) এবং অন্যরা। পটনায়।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের সঙ্গে দেখা করে বেরোচ্ছেন আরজেডি সাংসদ অভয় কুশওয়াহা (মাঝে) এবং অন্যরা। পটনায়। ছবি: পিটিআই।

লম্বা সময় ধরে ভোট নয়। ছট পুজোর পরেই সংক্ষিপ্ত পর্বে বিহারের বিধানসভা নির্বাচন সেরে ফেলার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানাল শাসক ও বিরোধী পক্ষ।

বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বিহারে গিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার ও অন্য দুই কমিশনার সুখবীর সিংহ সাঁধু এবং বিবেক জোশী শুক্রবার রাতে পটনায় পৌঁছে শনিবার শহরের একটি হোটেলে ১২টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরে তাঁরা বৈঠক করেছেন ডিভিশনাল কমিশনার, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অর্থাৎ জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে। সফরের শেষ দিনে, আজ, রবিবার কমিশনের কর্তারা দফায় দফায় নির্বাচনের নোডাল অফিসার, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নোডাল আধিকারিক, রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং ডিজি-র সঙ্গে ভোটের প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করবেন। দিল্লি ফিরে শীঘ্রই বিহারের ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করার কথা কমিশনের।

কমিশনের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতারাই বলেছেন, দীপাবলি ও ছট উপলক্ষে বাইরে কর্মরত বহু মানুষ বিহারে ফেরেন। ছটের পরে পরেই নির্বাচন করে নিলে তাঁরা একেবারে ভোট দিয়ে ফিরতে পারবেন। প্রশাসনের প্রস্তুতির জন্যও সুবিধা হবে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ এক দফায় ভোটের দাবি জানিয়েছে। শাসক বিজেপি, প্রধান বিরোধী দল আরজেডি এবং বাম দলগুলি দু’দফায় ভোটের পক্ষপাতী। তবে কোনও দলই দু’দফার বেশি ভোট-পর্ব প্রলম্বিত করার পক্ষে নয়। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে বিহারে শেষ বার বিধানসভা ভোট হয়েছিল তিন দফায়।

জেডিইউ-এর সাংসদ সঞ্জয় কুমার ঝা-র দাবি, বিহারে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে উন্নত। মহারাষ্ট্রে এক দফায় ভোট করা গেলে বিহারে করা যাবে না কেন? বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ জায়সওয়ালেরও দাবি, ভোট-পর্ব বেশি ছড়িয়ে করা অর্থহীন। বেশি হলে দু’দফায় করা যেতে পারে। আরজেডি-র অভয় কুশাওয়াহদের মত, ভোট দু’দফায় হোক। তবে তার আগে ভোট পরিচালনায় নিরপেক্ষ আধিকারিক ও কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে কমিশনকে। সূত্রের খবর, কমিশনের কর্তারা সব রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করেছেন, নির্বাচনের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও মসৃণ রাখার জন্য সব বুথে তারা যেন এজেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করে। ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার পরে প্রশ্ন তোলার বদলে বুথে এজেন্ট থাকা জরুরি। বিরোধী দলের নেতারা আবার কমিশনের কাছে পাল্টা দাবি জানিয়েছেন, ভোটের হিসেব রাখা হয় যে ১৭সি ফর্‌ম-এ, এজেন্টরা যাতে তা ঠিকমতো পান, সেটা দেখতে হবে।

তবে ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে বিস্তর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে জ্ঞানেশদের। সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন এসআইআর প্রক্রিয়ার অসঙ্গতি নিয়ে লিখিত ভাবে প্রশ্ন জমা দিয়েছে কমিশনের কাছে। কংগ্রেস নেতা রাজেশ কুমার, শাকিল আহমেদ খানেরা দাবি করেছেন, খসড়া তালিকা থেকে যে সব নাম চূড়ান্ত তালিকায় বাদ গিয়েছে এবং যাঁদের অন্তর্ভুক্তি হয়েছে, আলাদা করে সেই তালিকা প্রকাশ করুক কমিশন। কার নাম কেন বাদ গেল, সেই ব্যাখ্যা স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন। কোনও অনুপ্রবেশকারীর নাম ভোটার তালিকায় থাকবে না বলে বিহারে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই ‘শ্রেণি’তে কত জন বিদেশি পাওয়া গিয়েছে এবং নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তা-ও জানানোর দাবি তুলেছেন শাকিলেরা। আরজেডি-র তরফে অভয়ও দাবি জানিয়েছেন, খসড়া ভোটার তালিকা থেকে চূড়ান্ত তালিকায় বাদ যাওয়া তিন লক্ষ ৬৬ হাজার নাম প্রকাশ্যে আনতে হবে। কমিশনের কর্তারা তাঁদের বলেছেন, পদ্ধতি মেনেই এসআইআর হয়েছে। তার বেশি ব্যাখ্যা এখনও মেলেনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bihar Election Commission Bihar Assembly Election 2025

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy